বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

প্রতারণার মানচিত্র আর কত বড় হবে?

শান্তিতো সব জায়গাতেই প্রয়োজন। মনে, সংসারে, সমাজে, রাষ্ট্রে, পৃথিবীতে- কোথায় প্রয়োজন নেই শান্তির ? কিন্তু প্রশ্ন হলো, কাক্সিক্ষত জায়গাগুলোতে শান্তি কতটা বিরাজ করছে? তবে শান্তির আলাপচারিতা এবং প্রপাগান্ডা কম হচ্ছেনা, বরং একটু বেশিই হচ্ছে। কথা ও কাজের এমন গড়মিলের চিত্রকে প্রতারণার চিত্র হিসেবে চিহ্নিত করলে কি ভুল করা হবে? শান্তি আসলে মানুষের আচরণের সাথে সম্পৃক্ত। আচরণে যদি ন্যায় না থাকে, সততা না থাকে তাহলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে কেমন করে? অথচ এখন আমরা শান্তি-সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ডে, রোডম্যাপে লক্ষ্য করছি চাতুর্য ও প্রতারণার চিত্র। শুধু শান্তির রোডম্যাপে নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই আমরা প্রতারণার চিত্র কমবেশি লক্ষ্য করছি। তবে যে যত বড়, তার প্রতারণার মানচিত্রটাও হয় ততো বড়।
প্রতারণার প্রভাবটা কিন্তু আশপাশেও পড়ে। মানুষ তো দেখেও শেখে। বর্তমান সভ্যতায় বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, সাধারণ অভাবি মানুষের পাশাপাশি তাল মিলিয়ে অসাধারণ মানুষরাও প্রতারণামূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন ব্যাপকভাবে। এমনকি রাজা-মহারাজা তথা রাষ্ট্রপ্রধানরাও যুক্ত হয়ে পড়ছেন ওই অপকর্মে। অবশ্য যাদের কপাল মন্দ তারা ধরা পড়ে যান এবং অবনত মস্তকে সিংহাসন ছেড়ে বিদায় নিতে হয়। এতকিছুর পরও কিন্তু প্রতারণার কর্মকা- থেমে নেই। আসলে মানুষ যখন আদর্শ ত্যাগ করে নীতিহীন হয়ে পড়ে, তখন তার নফস্ বা প্রবৃত্তি তাকে শাসন করে এবং নিয়ে যায় ভুল পথে। কিন্তু প্রশ্ন হলো,‘বর্তমান সভ্যতায় নফ্সের গতিবিধি নিয়ে সমাজ-সংসার কতটা সচেতন।’ বরং বলা যায়, বর্তমান সভ্যতাকে তো ‘নফসে আম্মারা’ তথা মন্দ প্রবৃত্তিই  পরিচালনা করে যাচ্ছে। এ কারণেই তো ঘরে-বাইরে, পৃথিবীতে এত অশান্তি।
প্রতারণার প্রভাব কিন্তু ঘর-সংসারেও লক্ষ্য করা যায়।  রয়টার্স পরিবেশিত খবরে বলা হয়, প্রতারণার মামলায় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর স্ত্রী সারা নেতানিয়াহুকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। কিন্তু তার অপরাধ কী? খবরে বলা হয়, সারা ও অন্য একজন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে দিনের পর দিন রেস্তোরাঁ থেকে খাবার অর্ডার করে প্রতারণার মাধ্যমে সরকারি তহবিল থেকে এক লাখ মার্কিন ডলারের অধিক অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। দেশটির আইন অনুযায়ী সরকারিভাবে বাড়িতে রান্নার লোক নিয়োগ দেওয়া হলে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার আনানো নিষেধ। ৬ অক্টোবর শনিবার যখন সারাকে আদালতে আনা হয় তখন তাকে চিন্তিত দেখাচ্ছিল। এ সময় সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি। দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- হতে পারে সারার। প্রশ্ন জাগে, ওই এক লাখ মার্কিন ডলারের চাইতে তাঁর আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর মূল্য কি অনেক বেশি নয়?

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ