যশোরের চৌগাছায় বিএনপি ৩৩ নেতাকর্মীর নামে আবারো নাশকতার মামলা
যশোর থেকে মোস্তফা রুহুল কুদ্দুস: চৌগাছায় উপজেলা বিএনপির ৩৩ নেতাকর্মীর নামে আবারো নাশকতার মামলা দিয়েছে পুলিশ; যাকে ‘গায়েবি মামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি নেতারা। এর আগেও চৌগাছায় একই ধরনের বহু মামলা বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের নামে রুজু করেছে পুলিশ। এ মামলায় দুইজনকে আটক দেখিয়েছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, চৌগাছা পৌরসভার মালোপাড়ার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে আল মামুন শিবলি ও জগদীশপুর গ্রামের মৃত শুকুর ম-লের ছেলে জামাত আলী। ৭ অক্টোবর রাতে এ মামলা রুজু করা হয়।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পাতিবিলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও সিংহঝুলি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুচ আলী দফাদার, পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র সেলিম রেজা আওলিয়ার, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও চৌগাছা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম চঞ্চল, পৌরসভার ইছাপুর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিচুর রহমান, সিংহঝুলি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাই, হাকিমপুর ইউনিয়ন সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন, নারায়ণপুর ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক দাউদ হোসেনসহ মোট ৩৩জন জন। মামলার বাদী চৌগাছা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আকিকুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘আসামীরা ৭ অক্টোবর বিকেল চারটা ৫০ মিনিটের দিকে চৌগাছা কাঁচাবাজার এলাকায় কওমি মাদরাসা মাঠে ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রদানকে কেন্দ্র করে বর্তমান সরকারকে উৎখাত ও নাশকতা করার উদ্দেশ্যে গোপন মিটিং করছিল। এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি বোমা, সরকারবিরোধী ৬২টি লিফলেট এবং একটি হোন্ডা অরনেট মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয় মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ শতভাগ মিথ্যা অভিযোগে এ মামলা দায়ের করেছে। এটি একটি ‘গায়েবি মামলা’। সারা দেশে সরকারিবিরোধীদের নামে এমন হাজার হাজার ‘গায়েবি মামলা’ দেওয়া হচ্ছে। এতে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। তিনি দ্রুত এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ
মণিরামপুরের ঝাঁপা গ্রামে মঞ্জু খাতুন (৩০) নামে দুই সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাকে স্বামী বাবলু হোসেন গলা টিপে হত্যা করেছেন। বাবলু মালয়েশিয়া প্রবাসী। অন্য নারীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে তিনি স্ত্রীকে হত্যা করেছেন দাবি মঞ্জুর পরিবারের। এই ঘটনায় স্বজনরা হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। মঞ্জুর ভাই কালাম জানান, পায় ১৫ বছর আগে ঝাঁপা মিস্ত্রিপাড়ার রাজ আলীর ছেলে বাবলু হোসেনে সঙ্গে বিয়ে হয় একই গ্রামের বাগাডেঙিপাড়ার জমশেদ মোড়লের মেয়ে মঞ্জু খাতুনের। জিহাদ (১১) ও লামিয়া (৮) নামে ওই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। পরকীয়া নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। এরইমধ্যে মালয়েশিয়ায় কাজের সন্ধানে যান বাবলু। কিন্তু সংসারের অশান্তি কমেনি। এই পর্যন্ত ৭-৮ বার বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য শালিসও হয়। মাস দুয়েক আগে বিদেশ থেকে ফিরে শালিসের মাধ্যমে মঞ্জুকে ঘরে তোলেন বাবলু। কালামের অভিযোগ, ‘পাড়ার একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া রয়েছে বাবলুর। এই কারণে সোমবার বিকেলে ছেলে জিসান ও বাবা-মাকে মাঠে পাঠিয়ে দিয়ে মঞ্জুকে গলাটিপে হত্যা করে সে। বিষয়টি চাপা দিতে এরপর মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে বাবলু রাজগঞ্জ বাজারে যায়। সেখান থেকে ফিরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আশপাশের লোকের কাছে প্রচার করে মঞ্জু স্ট্রোক করে মারা গেছে। আমাদেরকেও একই কথা বলে ফোন করে বাবলু। সকালে দেখি মঞ্জুর গলায় কালো দাগ। এতে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, মঞ্জুকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে বাবলু। এই বিষয়ে আমরা হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। জানতে চাইলে মঞ্জুর বাবা জমশেদ আলী কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্থানীয় ইউপি সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, শুনেছি, সোমবার বিকেলে বাবলু তার ছেলেটিকে সাথে নিয়ে রাজগঞ্জ বাজারে গেছে। তখন মঞ্জু খাটের ওপর শুয়ে ছিল। পরে সে নিচে পড়ে যায়। এসময় পাশের তিন নারী এসে মঞ্জুকে ধরেন। তাদের হাতের ওপরই মঞ্জুর প্রাণ গেছে বলে তারা জানিয়েছে। জানতে চাইলে ঝাঁপা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই সাখাওয়াত হোসেন বলেন, লাশের গলার কাছে একটা লালচে দাগ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হচ্ছে।