ধাওয়ান-রোহিতের জোড়া সেঞ্চুরিতে ফাইনালে ভারত
কামরুজ্জামান হিরু: পাকিস্তানকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করলো ভারত। সুপার ফোরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯ উইকেটের সহজ পার্থক্যে হারিয়েছে শিরোপা প্রত্যাশি দলটি। চিরপ্রতিদ্বন্ধীদের বিপক্ষে দাপুটে এ জয়ে ওপেনিং ব্যাট করতে নামা শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মার জোড়া সেঞ্চুরি সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। শুধু তাই নয়, এই জুটি রেকর্ডও করে ফেলেছেন। উদ্বোধনী জুটির কথা ভাবলেই ভারতীয় সমর্থকেরা এখনো শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলির কথা ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ২০ বছর আগে এই দুজন ১৫৯ রান তুলেছিলেন। সে রেকর্ড এত দিন অধরা ছিল সবার। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে গড়া সে রেকর্ড ভাঙ্গলো দুবাইয়ে। পাকিস্তানের বোলারদের তুলোধুনো করে শিখর ধাওয়ান ও রোহিত শর্মা জুটি তুলে নিলেন ২১০ রান। উদ্বোধনী জুটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম দ্বিশতক জুটি গড়ার খানিক পরেই আউট হন শিখর ধাওয়ান। ৩৩.৩ ওভারে ধাওয়ানকে রান আউট করেন শোয়েব মালিক। রোহিত-ধাওয়ানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সামনে মূলত এদিন পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির-হাসান আলীদের নিয়ে গড়া শক্তিশালী বোলিং ইউনিট পাত্তাই পায়নি। ৩৯.৩ ওভারে ১ উইকেট হারিয়েই ২৩৮ সংগ্রহ করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। ধাওয়ান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরি করেন। তিনি সেঞ্চুরি করতে ১৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯৫ বল খেলেন। শেষ পর্যন্ত এ বাঁহাতি ১০০ বলে ১৬টি চার ও দুটি ছক্কায় ১১৪ রান করে আউট হন। অন্যদিকে ১৯তম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রোহিত শর্মা। ১০৬ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান তিনি। রোহিত ১১৯ বলে আরও একটি ছক্কা যোগ করে ১১১ রান করে অপরাজিত থেকে জয় নিশ্চিত করেন। অন্যপ্রান্তে ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন আম্বাতি রায়দু।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান সংগ্রহ করেছিল ২৩৭ রান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯০ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৮ রান করেন শোয়েব মালিক। প্রথম উইকেট ব্যাটিংয়ে নামেন ফখর জামান ও ইমাম উল হক। ভালভাবেই শুরু করেছিলেন দু’জন। তবে দলীয় ২৪ রানে এই জুটিতে আঘাত হানেন যুভেন্দ্র চাহাল। অষ্টম ওভারের শেষ বলে তার বলে এলবির শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ১০ রানে ফেরেন ইমাম উল হক। এরপর ব্যক্তিগত ৩১ রানে কুলদীপ যাদবের বলে এলবির শিকার হয়ে বিদায় নেন ফখর জামান (৫৫/২)। ৩ রানের ব্যবধানে ১৬তম ওভারের শেষ বলে রান আউট হয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে ফিরে যান বাবর আজম (৫৮/৩)। এরপর সরফরাজ আহমেদের সঙ্গে দলের হাল ধরেন শোয়েব মালিক। দু’জন মিলে ১০৭ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ৬৫ রানে এই জুটিতে আঘাত হানেন কুলদীপ যাদব। তার করা ৩৯তম ওভারের শেষ বলে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৪৪ রানে ফেরেন সরফরাজ (১৬৫/৪)। ৪৪তম ওভারের চতুর্থ বলে পঞ্চম উইকেট হারায় পাকিস্তান। দলীয় ২০৩ রানে জাসপ্রিত বুমরাহ’র বলে উইকেটরক্ষক ধোনির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শোয়েব মালিক (৭৮)। এরপর ৪৫ ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৩০ রানে আসিফ আলীকে বোল্ড করে ফেরান চাহাল (২১১/৬)। আর তাতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন ভারতীয় এই স্পিনার। এই ম্যাচে কোনো পরিবর্তন আনেনি ভারত। অন্যদিকে, এই ম্যাচে একাদশে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ আমির ও শাদাব খান। একাদশে নেই হারিস সোহেল ও উসমান খান। উল্লেখ্য চলমান এশিয়া কাপে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার পাকিস্তানকে হারালো ভারত। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে মাত্র ১৬২ রানে বেধে রেখে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ভারত। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে পাকিস্তান। অবস্থা অনুযায়ী ফাইনাল নিশ্চিত করতে পাকিস্তানকে এখন সুপার ফোরের শেষ ম্যাচের ফলাফলের অপেক্ষায় থকিতে হবে।