বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

এবি ব্যাংকের ১২ পরিচালককে দুদকে তলব

স্টাফ রিপোর্টার : সিটিসেলের নামে ৩৮৩ কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের ঘটনায় এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হকসহ ১২ পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১ থেকে ৩ অক্টোবর রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের হাজির হতে গতকাল সোমবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামসুল আলম নোটিস পাঠান।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচায্য জানান, এম ওয়াহিদুল হক, মো. ফিরোজ আহমেদ, এম এ আউয়াল ও অধ্যাপক মো. ইমতিয়াজ হোসেনকে ১ অক্টোবর তলব করা হয়েছে। পরদিন শিশির রঞ্জন বোস, সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন, মিশাল কবির ও ফাহিমুল হককে তলব করা হয়েছে। আর মো. মেজবাহুল হক, আনোয়ার জামিল সিদ্দিকী, বি বি সাহা রায় এবং রুনা জাকিয়া শাহরুদ খানকে তলব করা হয়েছে ৩ অক্টোবর। তবে তলব করা এই ১২ জন এই অর্থ আত্মসাতের এই মামলার আসামী নন বলে জানান প্রনব।
এদিকে এই অর্থ আত্মসাতের মামলার আসামী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপি নেতা এম মোর্শেদ খান ও তার স্ত্রী নাছরিন খানকে আজ মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা সামছুল আলম।
গত বছের ২৮ জুন রাজধানীর বনানী থানায় করা মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোর্শেদ খান, তার স্ত্রী, সিটিসেলের এমডি মেহবুব চৌধুরীসহ মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের মূল কোম্পানির নাম প্যাসিফিক টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড (পিবিটিএল)। মোর্শেদ খান এর চেয়ারম্যান, তার স্ত্রী নাছরিন খানও একজন পরিচালক। এ মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংক থেকে অনিয়মের মাধ্যমে সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। দেনার দায়ে ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের হাত ধরেই দেড় যুগ আগে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন সেবার যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল) নামে টেলিকম সেবা পরিচালনার লাইসেন্স পায় বর্তমান সিটিসেল। পরের বছর হংকং হাচিসন টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে বিটিএল নাম বদলে হয় হাচসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল)।
১৯৯৩ সালে মোর্শেদ খানের মালিকানাধীন প্যাসিফিক মটরস ও ফারইস্ট টেলিকম মিলে এইচবিটিএল-এর শেয়ার কিনে নিলে এ কোম্পানির মালিকানায় পরিবর্তন আসে। কোম্পানির নাম বদলে হয় প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড। প্যাসিফিক মটরস যখন সিটিসেলের মালিকানায় আসে, মোর্শেদ খান তখন মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিনিয়োগ বিষয়ক বিশেষ দূতের দায়িত্বে। আর এইচ এম এরশাদ সরকারের সময়ে সিটিসেল যখন লাইসেন্স পায়, মোর্শেদ খান তখন ছিলেন জাতীয় পার্টির কোষাধ্যক্ষ।
একমাত্র অপারেটর হওয়ার সুযোগে সিটিসেল বিএনপি সরকারের সময়ে একচেটিয়া ব্যবসা করে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর আরও কোম্পানিকে মোবাইল ফোন সেবার লাইসেন্স দেওয়া হলে সেই একচেটিয়া ব্যবসার অবসান ঘটে। এরপর ধুকতে থাকা এই কোম্পানিতে ২০০৪ সালে বিনিয়োগ করে সিঙ্গাপুরের সিংটেল। কিন্তু ব্যবসার আর প্রসার ঘটেনি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক মোর্শেদ খানের প্যাসিফিক মোটরস লিমিটেড।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ