বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

দুই যুগেও অপসারণ হয়নি আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনের কোয়ার্টারগুলো

আত্রাই রেলওয়ে স্টেশনের (পুরাতন) পরিত্যক্ত কোয়ার্টার। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে মূল্যবান সামগ্রী-সংগ্রাম

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) : নওগাঁর আত্রাইয়ের আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের আবাসিক কোয়ার্টারগুলোকে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্ররিত্যক্ত ঘোষণার পর দীর্ঘদিন দুই যুগ অতিবাহিত হলেও এগুলো অপসারণ না করায় দিন দিন বিভিন্ন প্রকার অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে। এছাড়াও কোয়ার্টারগুলোর ইট, দরজা, জানালাসহ মূল্যবান সামগ্রী দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বর্তমান আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে আত্রাই পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন। এক সময় এখানেই ছিলো একমাত্র রেলওয়ে স্টেশন। পরবর্তীতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ  যাত্রী ও জনসাধারণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আত্রাই নদী সংলগ্ন আত্রাইঘাটে রেলওয়ে স্টেশনটি স্থানান্তর করে। স্টেশন স্থানান্তর করা হলেও  এখানে কেবলমাত্র যাত্রীদের ট্রেনে ওঠা নামার জন্য প্লাটফরম, টিকিট কাউন্টার ও বুকিং কার্যক্রম ছাড়া সব কিছুাই থেকে যায় পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে। ট্রেনের ক্রসিং, পয়েন্টস পরিবর্তন, ডাউন কার্যক্রমসহ এখনও সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয় পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন থেকে। এদিকে পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন স্থানে সে সময় গড়ে তোলা হয় বেশ কয়েকটি আবাসিক কোয়ার্টার। যেখানে রেলের কর্মকর্তা কর্মচারীরা বসবাস করতেন। কালের বিবর্তে পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনের সাথে জনসংযোগ কমে যাওয়ায় সেখানে বসবাসেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে রেল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এখন আর ব্যবহার হয়না এসব কোয়াটারগুলো। ফলে  দিন দিন অকেজো হতে থাকে এসব কোয়ার্টার। পরিণত হতে থাকে অসামাজিক কার্যকলাপের আখড়ায়।

রেল স্টেশন সূত্রে জানা যায়, এক সময় সেখানে ১৪টি কোয়ার্টার ছিলো। যার সবগুলোতেই স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে পয়েন্টম্যান পর্যন্ত পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। বর্তমানে ১৪টি কোয়ার্টারের প্রায় সবগুলোই পরিত্যক্ত দিন দিন বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এখনও একটি কোয়ার্টারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন পয়েন্টম্যান মতিউর রহমান।

এ ব্যাপারে পয়েন্টম্যান মতিউর রহমান বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রায় ২৪ বছর আগে এসব কোয়ার্টার পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন। আমি পরিবার পরিজনসহ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানেই বসবাস করি। ফলে কিছুটা হলেও রেলওয়ের সম্পদ আজও সংরক্ষিত আছে। অন্যথায় এতদিনে হয়তোবা সবগুলোই হারিয়ে যেত।

এ ব্যাপারে আত্রাই রুবেল মোবাইল সার্ভিস সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. রুবেল বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এগুলো পরিত্যক্ত কোয়াটারের সামগ্রী নিলামে বিক্রয় করলে সরকারের অনেক আয় হবে। আবার অন্যদিকে এলাকাও সুশৃঙ্খল থাকবে। তিনি আরো বলেন এ জায়গাটি বিনোদন স্পট হিসাবে গড়ে তোলার মতো একটি জায়গা। সতরাং এখানকার পরিত্যক্ত কোয়ার্টারগুলো অপসারণ করে সেখানে বিনোদন স্পট গড়ে তুললে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনেক রাজস্ব আয় বাড়বে। সেই সাথে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এ ব্যাপারে আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. ছাইফুল ইসলাম জানান, রেলের ওকেজো ও পরিত্যক্ত মালামাল সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আর এগুলোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার তাদেরই রয়েছে।

এদিকে দ্রুত পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ