খুলনায় ধরে ধরে হত্যাকান্ড
খুলনা অফিস : আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ধরে ধরে হত্যাকান্ড (টার্গেট কিলিং) বেড়েছে খুলনায়। হত্যাকান্ডের পাল্টা হিসেবে সশস্ত্র হামলা ও হত্যার ঘটনায় আতঙ্ক বাড়ছে। তবে পুলিশের দাবি, চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। জানা যায়, সর্বশেষ ৫ সেপ্টেম্বর রাতে মহানগরীর রূপসা ঘাট এলাকায় কামরুজ্জামান সুমন নামের এক যুবককে গুলী করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ জানায়, নিহত সুমন ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর টুটপাড়ায় তানভীর হোসেন রকি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ছিলেন।
দীর্ঘদিন কারাভোগের পর দেড় মাস আগে জামিনে মুক্তি পায় সুমন। রকি হত্যার প্রতিশোধ নিতেই সুমনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধারণা করছে পুলিশ। এর আগে গ্রুপিং দ্বন্দে একই এলাকায় প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয় সৈকত রোহান। এই খুনের আগে টুটপাড়ায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় একই গ্রুপের আল আমিন ওরফে তুহিনকে। এছাড়া গত ১৫ আগস্ট রাতে মহানগরীর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়ায় হত্যা করা হয় তরুণ শ্রমিক লীগ নেতা শরিফুল ইসলামকে। গত শনিবার খুলনা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে নিহতের স্ত্রী শিউলি বেগম জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। মামলা তুলে নিতে এখনও তাদেরকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। প্রভাব বিস্তারের দ্বন্দে একইভাবে খুলনা পাবলিক স্কুলের ছাত্র ফাহমিদ তানভির রাজিনসহ আলাদা ঘটনায় নিহত হয়েছে আরও দুই শিক্ষার্থী। খুলনা সরকারি সুন্দরবন আদর্শ কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকাশ চন্দ্র অধিকারী বলেন, প্রতিশোধ নিতে পাল্টা হত্যাকান্ডের ঘটনা উদ্বেগজনক। রাজনৈতিক গ্রুপিং, প্রভাব বিস্তার নিয়ে দ্বন্দে হত্যা-পাল্টা হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। সামাজিক অস্থিরতা, ব্যক্তিস্বার্থ, নৈতিক স্খলন ও মাদকের সহজলভ্যতা এসব অপরাধের জন্য দায়ি। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র (মিডিয়া) সহকারী কমিশনার সোনালী সেন সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন হত্যা মামলার আসামী যারা পলাতক বা জামিনে রয়েছে তাদের মনিটরিং করা হচ্ছে। এলাকাভিত্তিক পুলিশিং কমিটিকে জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, পরপর কয়েকটি হত্যাকান্ড ‘গ্যাং কালচার’ প্রতিহত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। এসব ঘটনার পেছনে কাদের ভূমিকা রয়েছে তা খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছে পুলিশ।