শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খুলনার শহীদ আবুল কাশেম কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

 

খুলনা অফিস : অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অন্ধকারে ডুবে গেছে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার কৈয়া বাজার সংলগ্ন ২৩ বছর বয়সী শহীদ আবুল কাশেম কলেজ। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের বিকাশের পরিবর্তে আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা লুকাতে পরিচালনা পরিষদের সভা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। দীর্ঘ ২৫ মাসে ২৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা অধ্যক্ষ আত্মসাৎ করেছেন বলে অডিট প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে। খুলনা প্রেস ক্লাবে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও শিক্ষকবৃন্দ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষা পরিদর্শক আব্দুল মজিদ ও সহকারী শিক্ষা পরিদর্শক কাজী নূরে আলম সিদ্দিকীর পরিদর্শনের পর অডিটের দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরা হয়। বলা হয়, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ২ লাখ ৫২ হাজার টাকা, অযৌক্তিক লোনের নামে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, যাতায়াত ব্যয় ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে টিউশন ফিসের ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফিস বাবদ কলেজের ফান্ড থেকে ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা, ফটোকপি মেশিন মেরামত বাবদ ৪৩ হাজার টাকা, পুকুরে মাছ চাষ বাবদ ১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা অধ্যক্ষ আত্মসাৎ করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ পরিচালনা পরিষদের সভা আহ্বান করছেন না কলেজ অধ্যক্ষ এসএম আরিফুল ইসলাম স্বপন। কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের পক্ষ থেকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে তাকে সভা আহ্বানের অনুরোধ করা হলেও নানা অজুহাতে এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। অধ্যক্ষ একই সঙ্গে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিবের দায়িত্বে থাকায় বিধি অনুযায়ী সভা আহ্বানের দায়িত্ব তার। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভা না হওয়ায় একদিকে অধ্যক্ষের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির কোনো সুরাহা হচ্ছে না, অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের একাডেমিকসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা সমস্যার সমাধানও করা যাচ্ছে না। এতে করে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ কমিটির ৯ জন সদস্য সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আবেদন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সদস্য সচিব বরাবর দাখিল করা হয়। উল্লেখ করা হয়, সভাপতি পঞ্চানন বিশ্বাস এমপি’র সভাপতিত্বে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সর্বশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২৭ ডিসেম্বর সভাপতির অনুপস্থিতিতে আরও একটি সভা দেখানো হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্যাট্রিক শংকর সরকার, কালিদাস মল্লিক, হিসাববিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক আশুতোষ ম-ল, রসায়নবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. গিয়াস উদ্দিন, শিক্ষক প্রতিনিধি সরদার রফিকুল ইসলাম, পঞ্চানন গোলদার, ব্যবসায় সংগঠনের সহকারী অধ্যাপক সুশান্ত কুমার গোলদার ও বাংলা প্রভাষক নন্দিতা ম-ল উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ এসএম আরিফুল ইসলাম স্বপন বলেন, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভা নিয়মিত হচ্ছে। সর্বশেষ ১০ জুলাইও সভা হয়েছে। তবে, ওই সভায় সভাপতি অনুপস্থিত থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন- মর্মে দেখানো হয়েছে। সভাপতি পরে রেজুলেশনে সাক্ষর করবেন। সভাপতি অনুপস্থিত থাকার পরও সভায় উপস্থিত দেখানোর বিষয়টি অনৈতিক কি-না জানতে চাইলে ‘প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে অনেক সময় অনিয়ম করতে হয়’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে, অডিট আপত্তির বিষয়টি স্বীকার করলেও তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ বানোয়াট বলে দাবি করেন তিনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ