বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

শনির আখড়ায় ছাত্রকে চাপা দিয়ে পালালো পিকআপ

স্টাফ রিপোর্টার : নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজপথে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা যানবাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করার সময় এক ছাত্রকে চাপা দিয়ে একটি পিকআপ পালিয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ির শনির আখড়ায় দনিয়া কলেজের সামনে এঘটনার ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সাব্বির বলেন, “সকাল ১০টা থেকেই শনির আখড়ার দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তা আটকে যানবাহনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করছিল। পিক-আপ ভ্যানটি আসার আগেও একটি বাসের চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করে ছেড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।” ছাত্ররা থামতে বললেও পিক-আপটির চালক গাড়ি চালিয়ে নিতে থাকে। এ সময় উত্তেজিত এক ছাত্র হাতে লাঠি নিয়ে পিক-আপের সামনে চলে আসে, সেসময় চালক গাড়ি না থামিয়ে ছাত্রের ওপর দিয়ে চালিয়ে চলে যায়।”
ফয়সাল নামে শনির আখড়ায় পিক-আপ চাপায় আহত এক ছাত্র সাইন বোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাক্টিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে হাসপাতালটির ম্যানেজার ড. সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বেলা ১২টার দিকে ফয়সাল হাসপাতালে ভর্তি হন। আমরা একজন অর্থোপেডিক ডাক্তার ও একজন সার্জেন্ট দেখিয়েছি। তিনি মুখ, কোমর ও বাম পায়ে আঘাত পেয়েছেন। বাম পায়ে ফ্র্যাকচার আছে ও বাম পায়ের কোমরেও ব্যাথা পেয়েছে। ফয়সাল শঙ্কামুক্ত জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, তাকে ইউরোলোজির আরেকটি ডাক্তার দেখানো হবে।”
যাত্রাবাড়ী জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, “অনেকেই আমাদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইছে। আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজখবর নিচ্ছি। এরকম ঘটনা যদি ঘটে থাকে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করে দেখার জন্য পিকআপটিকে থামানোর চেষ্টা করে। পিক আপটি থামানোর চেষ্টায় পাদানির ওপর দাড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় এক শিক্ষার্থীকে। আরেক শিক্ষার্থী লাঠি নিয়ে পিকআপটির সামনে মাঝ বরাবরা এসে দাঁড়িয়ে সেটি থামাতে চায়। কিন্তু পিকআপটি না থামিয়ে চলে যায় শিক্ষার্থীর ওপর দিয়ে।
প্রোঅ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ম্যানেজার ডাক্তার সালাউদ্দিন ভুইয়া জানিয়েছেন, তার বাবা শামসুল হক। ‘ফয়সালের বাম পা, হিপ জয়েন্ট ও ঠোঁটে আঘাত লেগেছে। তাকে ১২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার এটিএম বাহার উদ্দিন ও এহতাশামুল হকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন সে।’
ফয়সালের বাবা শামসুল হক বলেন, ‘ফয়সাল সরকারি তোলারাম কলেজে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। সকালে কলেজে যাওয়ার কথা বলে সে বাসা থেকে বের হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জানতে পারি সে পিকআপের নিচে পড়েছে। আমি মতিঝিলে ছিলাম। আমাকে ফোন করে বলে ফয়সালকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। পরে জানানো হয় তাকে সাইনবোর্ড এলাকার ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমি পরে এখানে আসি। এখন আল্লাহর রহমতে ফয়সাল আশঙ্কামুক্ত।’ ফয়সাল তার পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় বসবাস করে।
বিকেলের দিকে পুলিশের যাত্রাবাড়ী জোনের এসি ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, ‘ওই পিকআপের নম্বরটি সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পিকআপটি আটক করা যায়নি। চালককেও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা পিকআপটি শনাক্ত করা ও চালককে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ