বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ঢাবিতে মূকাভিনেতাকে মারধর করল ছাত্রলীগ

স্টাফ রিপোর্টার : ফেসবুকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ছবি ও স্ট্যাটাস দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মূকাভিনেতাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।
মূকাভিনেতা মীর লোকমান জানান, শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস তাকে মারধর করেন। এর বিচার চেয়ে প্রক্টরের কাছে আবেদনও করেছেন বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেছেন, মারধর করেননি তিনি, ছাত্রলীগ নিয়ে ফেসবুকে ‘ট্রল’ করার বিষয়ে ওই মূকাভিনেতার কাছে শুধু জানতে চেয়েছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে পাস করা মীর লোকমান ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বর্তমানে তিনি সংগঠনটির পরিচালক। দেশ-বিদেশে প্রায় চার শতাধিক মূকাভিনয় প্রদর্শনী করেছেন এই শিল্পী।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে পিটুনির শিকার হন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। ক্যাম্পাসের গ্রন্থাগারের সামনে এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন তারা; হামলার সময় সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে।
তবে হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সরকার সমর্থক সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, আন্দোলনকারীদের ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে’ হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরদিন আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও আহতদের ১০টি ছবির সঙ্গে নিজের ফেসবুকের পাতায় পোস্ট দেন মীর লোকমান। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘সাবাস সোনার ছেলেরা! আজ ব্যাপক  খেলে দিয়েছো!!’
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, মীর লোকমান গতকাল রোববার পৌনে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই উপ-সম্পাদক সাদ বিন চৌধুরী ও মো. নাজিম, ছাত্রলীগ নেতা বকুল তাকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। এসময়  হঠাৎ করেই মীর লোকমানকে চড়-থাপ্পড় দিতে শুরু করেন জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা তাকে থামান।
মীর লোকমান বলেন, “অন্যায় দেখে বুকের মধ্যে ব্যথা পাই। তাই প্রতিবাদ জানিয়েছি। লাইব্রেরির সামনে কথা বলার সময় হঠাৎ করেই ও (সঞ্জিত) এসে আমাকে থাপ্পড় দেয়া শুরু করে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সঞ্জিত বলেন, “মারধর করিনি। আমি কেবল ছাত্রলীগকে নিয়ে কেন ট্রল করেছে তা জিজ্ঞেস করেছি। তবে দুই ছোটভাই তখন পাশ থেকে তার গায়ে হাত দেয়। আমি তাদের নিবৃত্ত করি। আর উনি ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন আমি নাকি উনাকে মেরেছি। আমি গায়ে হাত দেইনি, তবে ছাত্রলীগ নিয়ে ট্রল করলে কাউকে ছাড় দেব না নিশ্চিত।”
মীর লোকমানের অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, “প্রক্টর অফিসে যেহেতু তিনি অভিযোগ দিয়েছেন সেহেতু আমরা বিষয়টি দেখব।"

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ