শাহজাদপুরের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা ব্যাহত
এম,এ, জাফর লিটন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে: শাহজাদপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামগুলোতে অবস্থিত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে বেহালদশা বিরাজ করছে। সহকারি ও উপ সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দিয়ে চলছে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ফলে কেন্দ্রগুলো থেকে উপযুক্ত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সরে জমিনে ঘুরে এসব উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা উপকরণ ঔষধ সঙ্কট। আর এ অযুহাতেই প্রায়ই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন চিকিৎসকরা।
বর্তমানে শীতের তীব্রতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠান্ডাজনিত নানান রোগীর সংখ্যা। কিন্তু চিকিৎসকের অনুপস্থিতি আর প্রয়োজনীয় ঔষধের অভাবে গ্রামের হতদরিদ্র রোগীরা হতাশা হয়েই বাড়ী ফিরছেন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো খোলা রাখার সরকারী নির্দেশ থাকলেও বেলা ১১টা ১২টা কোন কোন জায়গায় বেলা ১টা বাজার সাথে সাথে তা বন্ধ হয়ে যায়। সরে জমিনে গত ৩০ জানুয়ারী পোরজনা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে দুপুর ১টার পূর্বেই তা বন্ধ করার প্রাক্কালে উপস্থিত হয়ে ভিতরে প্রবেশ করে জানা যায়, নানা সঙ্কটের কথা। কয়েকটি কক্ষ ঘুরে দেখা যায় ময়লা আবর্জনা আর চেয়ার টেবিলের ভাঙ্গাচুড়া। একমাত্র টয়লেট পরিত্যক্ত আছে ১ যুগের বেশি সময় ধরে। স্বাস্থ্য সহকারীদের বসার মত চেয়ার টেবিল নরবড়ে হয়ে আছে। অনেক জায়গায় দেয়ালের চুন সুরকী উঠে প্লাস্টার খসে পড়ছে। পোরজনা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ডাক্তার এস,এস,সি পরীক্ষার ডিউটি উপলক্ষে আয়োজিত মিটিংয়ে যোগ দিয়েছেন। সকাল থেকে ৭০/৮০জন রোগী দেখেছেন। রোগীর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ নেই। একই অবস্থা পুঠিয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র,নরিনা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র,করশালিকা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কায়েমপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র,রতনকান্দী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিরও। কোন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে ডাক্তার সপ্তাহের ১দিনও উপস্থিত দেখা যায়না। কোথাও কোথাও রোগীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেলেও বসার মত কোন বেঞ্চ ও চেয়ার না থাকায় অসুস্থ্য ও অপেক্ষমান রোগীদের বসার ব্যবস্থা হচ্ছেনা। কোন স্বাস্থ্য জরাজীর্ণ, গাছ-গাছালী দিয়ে ঘেরা। দেখে মনে হয় গরু ছাগলের চারণ ভূমি। বাহির থেকে দেখলে একটি পরিত্যক্ত ভবন মনে হয়। স্বাস্থ্য সহকারীগণ জানান, চেয়ার বেঞ্চ ও অবকাঠামোগত সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে লিখিতভাবে। কিন্তু কোন সারা পাওয়া যাচ্ছেনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সহকারী ও উপ-সহকারীদের দিয়ে চলে রোগী দেখার কাজ। রেজিষ্ট্রার খাতায় সিস্টেম অনুযায়ী রোগীদের নাম ও ঔষধ বিতরণ দেখিয়ে সরকারী ঔষধ বিভিন্ন ফর্মেসীতে বিক্রি করে দিচ্ছে। কিন্তু তা দেখার মত যেন কেউ নেই। তাই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে অনিয়ম চলছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও অবকাঠামোগত সংস্কার এখখন সময়ের দাবী।