শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রশিদকে নিয়ে আলোচনায় বিরক্ত অধিনায়ক সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার : আইপিএল শেষ করে গতকাল দুপুরেই দেশে ফিরেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আইপিএলে সাকিবের দল এবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ফাইনালে হেরেছে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে। আইপিএল শেষ করে এবার সাকিবের মিশন আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। টাইগারদের সামনে দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জুনে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। গতকাল বিমানবন্দরে আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে কথা বলার শুরুতেই সাকিব বলেন, ‘আসলে টি  টোয়েন্টিতে ফেভারিট বা অফেভারিট এই ধরনের কোনো তকমা থাকে না। যে কোন দল যে কোন সময় যে কাউকে হারাতে পারে। যেহেতু আফগানিস্তান আমাদের থেকে দুই ধাপ এগিয়ে তাই আমি বলবো সিরিজে ওরাই ফেভারিট।’ এই সিরিজটা যেন বাংলাদেশ বনাম রশিদ খানও হয়ে যাচ্ছে! কারণ টি-টোয়েন্টির বিশ্বসেরা এই লেগ স্পিনারকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। গেল ক’দিন বাংলাদেশ দলের প্র্যাকটিসে সংবাদ মাধ্যমের সামনে যারাই মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের সবাইকে কথা বলতে হয়েছে রশিদকে নিয়ে। তবে এখানে ব্যতিক্রম সাকিব আল হাসান। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আসলে রশিদ খানকে নিয়ে  কোনো আলোচনাই চান না। গতকাল সাকিবের কাছে রশিদ ফ্যাক্টর নিয়ে প্রশ্নটা তুলতেই সাকিব পাল্টা প্রশ্ন তার, ‘কারা আলোচনা করে? প্রশ্ন আপনারা করলে খেলোয়াড়রা উত্তর দিচ্ছে? নাকি খেলোয়াড়রা আলোচনা করছে?’ ‘প্রশ্ন আপনারা করলে আলোচনা হবেই। আমি উত্তর দিলাম না আলোচনাও হলো না।’সাকিব সংবাদ মাধ্যমে তিন-তিনটি প্রশ্ন রেখে বলে যান, ‘যাই হোক, ঠিক আছে। সবাইতো ভালো  বোলার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যারা খেলে সবাই ভালো বোলার। তাই কেউ ভালো বল করবে, কেউ খারাপ বল করবে। ভাল ব্যাটসম্যানরা সেটাকে ভালোভাবে সামলাবে সেটাই নিয়ম।’ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের সব ম্যাচ এবার খেলেছেন সাকিব। বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্স। রশিদও তার দলের সদস্য। দুজন স্পিন আক্রমণে নাজেহার করেছেন প্রতিপক্ষদের। ফাইনালে উঠেছেন। যদিও ফাইনাল জিতে শিরোপাটা নিজেদের করে নিতে পারেননি। তারপরও এই প্রায় দেড়মাসে মাঠ ও মাঠের বাইরে সতীর্থ রশিদ খানের অনেক কিছু যে বুদ্ধিমান অধিনায়ক সাকিব বুঝে এসেছেন তা কি আর বলতে! আফগানদেরকেই এই সিরিজে র‌্যাঙ্কিংয়ের কারণে এগিয়ে রাখছেন। কোন দল ফেভারিট এই প্রশ্নে সাকিব বলেন, ‘আসলে টি-টোয়েন্টিতে ফেভারিট বা অফেভারিট এই ধরনের কোন তকমা থাকে না। যে কোন দল যে কোন সময় যে কাউকে হারাতে পারে। যেহেতু আফগানিস্তান আমাদের চাইতে দুই ধাপ এগিয়ে (টি-টোয়েন্টি র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ১০, আফগানিস্তান ৮) তাই আমি বলবো ওরাই ফেভারিট।’ দেরাদুনে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট না খেলে পারিকল্পনা করে খেলতে চান সাকিব, ‘সবসময় সব জায়গাতে আক্রমণ করাটা যে ঠিক হবে এটা ঠিক না। অবশ্যই আমরা আলোচনা করবো। কোন জায়গায় কোনভাবে খেললে আমাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে সেইভাবে চেষ্টা করবো।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছে। সেটাও ২০১৪ সালে। ওই ম্যাচে হেসেখেলেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলায় তারা এগিয়ে গেছে অনেকদূর। র‌্যাঙ্কিংও দুই দলের ব্যবধান স্পষ্ট করছে। দুই দলের রেটিং পয়েন্টের পার্থক্য ১২। বাংলাদেশের ৭৫, আফগানিস্তানের ৮৭। বাংলাদেশ তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতলে র‌্যাঙ্কিংয়ে আফগানিস্তানকে পিছনে ফেলবে। তখন বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট হবে ৮২, আফগানিস্তানের ৮০। বাংলাদেশ উঠে যাবে নয়ে, আফগানিস্তান চলে যাবে দশে। যদি বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতে তাহলেও আফগানিস্তান ৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে থাকবে। আফগানিস্তান হোয়াইটওয়াশ করলে বাংলাদেশের সাথে তাদের রেটিং পয়েন্টের ব্যবধান হবে ২১। আফগানিস্তান ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে থাকবে। সব মিলিয়ে এ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে জিতলেই কেবল আফগানিস্তানকে পিছনে ফেলা সম্ভব। আফগানিস্তানের  বিপক্ষে ‘অলআউট ক্রিকেট’ হতে পারে সাফল্যের একমাত্র মন্ত্র। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে ভরসা থাকলেও সাকিব জানালেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার ধরণ ঠিক করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। সাকিব বলেন, ‘সবসময় সবজায়গাতে অ্যাটাক করাটা যে ঠিক হবে এটাও ঠিক না। অবশ্যই আমরা আলোচনা করবো। কোন জায়গায় কোনভাবে খেললে আমাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে সেইভাবে চেষ্টা করবো।’ ভারতের কন্ডিশন বলে আশাবাদী সাকিব বলেন,‘যদিও দেরাদুনে আমাদের কোন ম্যাচ হয়নি। তারপরেও আমার মনে হয় কন্ডিশন প্রায় একই হবে। ভারতে সাধারণত যে ধরনের উইকেট থাকে ওই ধরনেরই হবে। ওই অভিজ্ঞতাটা অবশ্যই কাজে আসবে।’ এবারের আইপিএলে নতুন জার্সিতে নেমেছিলেন সাকিব। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে প্রথম আসরেই দারুণ করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এ অলরাউন্ডার। ১৭ ম্যাচে ২৩৯ রান ও ১৪ উইকেট সাকিবের। দলকে রানার্সআপ করাতেও বড় অবদান রেখেছেন। তবে ব্যাটিংয়ে আরও রান করার সুযোগ ছিল বলে মনে করছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাকিব বলেন, ‘সব মিলিয়ে সন্তুষ্ট যে দল ভালো ফল পেয়েছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও সন্তুষ্ট। কিন্তু একটা অতৃপ্তি আছে সেটা হলো, প্রতি ম্যাচেই ভালো শুরু করার পরেও রানটা বড় করতে পারিনি।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ