বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ডায়াবেটিস রোগীদের আহার

কর্মব্যস্ত সপ্তাহ শেষে ছুটির দিনে মহাভোজ, রাতে পার্টি এমন ধারা চলছে জীবনে অনেকেরই। ঘরের বাইরে বা রেস্তোঁরায় খেতে গেলে ফাস্টফুড ও জাংকফুড হয় আহার্য খাদ্যদ্রব্য। নৈশ আহারে অনেক সময় অনেকের জীবনে তা আরোপিত তাই অনিবার্য। ডায়াবেটিসের রোগীরা এমন ডেথ মিছিলে শরিক হোন, অনেক সময় উপরোধে, অনেক সময় রেহাই না পাওয়া অবস্থার মুখোমুখিও হতে হয়।
ডায়াবেটিস ও স্থূলতা অভিন্ন সহচর, আর তাই এদুটে উপদ্রব থেকে পরিত্রাণের জন খাওয়ার অভ্যাস ও ব্যায়াম এই দুটো দিকের ওপর নজর দিতে হয় অবশ্য। আর মহাভোজ বা পার্টিতে ফাস্টফুড ও জাংক ফুড এড়ানো চাই। কারণ এগুলোতে থাকে প্রচুর ক্যালোরি, আর পুষ্টি উপরকণ থাকে খুবই সামান্য। অথচ বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরে রান্না করা খাবার অবশ্য অনেক বেশি স্বাস্থ্য কর ও পুষ্টিকর হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই খাবারগুলোতে থাকবে অনেক আঁশ, মাইকো নিউট্রিয়েন্ট (খণিজ ও ভিটামিন), খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এইগুলো। আর খাদ্যে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কম, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই রান্না হয় প্রায় সব সময়, ঘরনী বা কর্তা যদি রান্না করেন তাহলে তো প্রায় নিশ্চিত। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু টিপস জেনে রাখলে ভালো।
রক্তের সুগার মানের উপর শর্করা, শ্বেতসার প্রবল প্রভাব ফেলে। চর্বি ও প্রোটিনের তুলনায় বেশি তো বটেই। তাই শর্করা ব্যবহারে স্মার্ট হওয়া চাই সকলকেই। পরিমাণ ও গুণের দিকে নজর দিতে সবাইকে। পরিশোধিত শর্করা যেমন-ময়দার রুটি, লুচি, বিস্কিট, পান্তা চাল পরিমিত খেতে হবে। সোডা, ক্যান্ডি, প্যাকেট খাবার, স্ন্যাকস্ খাবারও খেতে হবে একেবারের সীমিত পরিমাণে।
আঁশ সমৃদ্ধ জটিল শর্করা যেসব খাবার সেগুলো খাবেন বেশি বেশি করে। যেমন, রঙীন শাক, সবজি, ফল, লাল চাল, মোটা আটা রুটি। এসব খাবার হজম হয় ধীরে ধীরে, উত্সারিত হয় ধীরে তাই শরীরে বেশি ইনসুলিন ক্ষরণ ও রোধ হয়, রক্তের সুগারও এত উচুতে উঠতে পারে না।
মন্ডা-মিঠাই, মিষ্টি যাদের খুব প্রিয় এরা ধীরে ধীরে কমিয়ে দেবেন এসব খাবার, যাতে রসনা কমে যায়।
মিষ্টি সামান্য যদি খানও খাবারের সঙ্গে শেষ পাতে অল্প পরিমাণে খাবেন, এক সঙ্গে দাড়িয়ে মিষ্টি খাবেন না। ডের্জার্টে সামান্য স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করতে পারেন। হেলদি ফ্যাট, পিনাট বাটার, দধি, বাদাম ইত্যাদি। চর্বি হজম ধীরে করে দেয়, তাই রক্তের সুগার এত দ্রুত তুঙ্গে উঠেনা। কোমল পানীয়, সোডা, জুস এড়িয়ে যান। প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে যান, ক্যানের সুপ, হিমায়িত ডিনার, লোফ্যাট মিল এগুলো সুগার লুকিয়ে থাকে। নিরাপদ চর্বি হলো আন স্যাচুরেটেড ফ্যাট, মাছের তেল, উদ্ভিজ তেল, জলপাই তেল, বাদাম তেল, এভাকেডো। ওমেগা৩ মেদ অম্ল প্রদাহ প্রতিরোধ করে, মগজ ও হূদ স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
-অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী
পরিচালক, ল্যাবরেটরী সার্ভিসেস
বারডেম, ঢাকা

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ