শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গণজোয়ার দেখে সরকারের পিছুটান -মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, তিনটি বিষয়ে বলতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সব তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে এবং খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রাখবেন এবং আগামীকাল (আজ) মঙ্গলবার তিনি মুক্তির আদেশ পাবেন। তিনি বলেন, আজকে দেশের এই ক্রান্তিকালে আগামী দিনে যে আন্দোলন আসছে, সেই আন্দোলনে  সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকসহ সকল আইনজীবীর নেতৃত্বে আন্দোলন সফল হবে। তৃতীয় হলো- গাজীপুরে যে গণজোয়ার উঠেছিল, সেই গণজোয়ার দেখে সরকার পিছুটান দিয়েছে। সরকার এমন কৌশল নিয়েছে যে নির্বাচনের আর ৫ থেকে ৭ দিন বাকীÑ এ সময় এসে সরকার এটি করেছে। আমরা গাজীপুরে নির্বাচন যাতে হয় তার আবেদন জানাবো।
গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্ট বার ভবনের সভাপতির কক্ষের সামনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ একথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি এডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট গরীবে  নেওয়াজ, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, সহ-সভাপতি এম গোলাম মোস্তফা, ড. মো: গোলাম রহমান ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, আবেদ রাজা, মনির হোসেন, শেখ অহিদুজ্জামান প্রমুখ।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এতো দিন চেষ্টা করেছি। দেশের মানুষ এখন আর আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসুচি দেখতে চায় না। সেজন্য রমযানের পরে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে এ সরকার পতনের জন্য। এই সরকারকে দেশের মানুষ দেখতে চায় না। সরকারের পরিবর্তন দেখতে চায়। দেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের ভোটের অধিকার এবং ন্যায় বিচার ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের এ আন্দোলন করত হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আমরা এ আন্দোলন সফল করবো এবং আগামী নির্বাচনে গাজীপুরের মতো গণজোয়ার সারা বাংলাদেশে দেখবেন। সেই গণ জোয়ারে আওয়ামী ও তাদের প্রার্থীরা মাঠে দাড়িঁয়ে থাকতে পারবে না। বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত।
জয়নুল আবেদীন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ অবস্থায় জেলে গেছেন, আর এখন জেলে থেকে অসুস্থ হয়ে গেলেন। ওই দিন আপিল বিভাগ যদি তাকে জামিন দিতেন তাহলে তিনি আজ অসুস্থ হতেন না। তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে জেলে রেখে অসুস্থ বানানো হচ্ছে। মঙ্গলবার তার জামিন আবেদনের শুনানির তারিখ রয়েছে। আমরা আশা করব আদালত ন্যায় বিচার করবেন এবং যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে তাকে জামিন দেবেন।
তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিদায়ের পর আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। আমি আসা করব আদালত সাহসিকতার সাথে জামিন দিয়ে প্রমাণ করবেন বিচার বিভাগ স্বাধীন। তিনি আরো বলেন, আমি আসা করব সর্বোচ্চ আদালত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার দায়িত্ব পালন করবেন।
মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা যদি না থাকে তাহলে গণতন্ত্র থাকবে না। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা না থাকলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। সরকারের পক্ষে রায় না চেয়ার কারণে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে চেয়ারে বসতে দেয়া হয়নি। বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আমরা মনেকরি বিচারবিভাগকে স্বাধীন থাকতে হবে, সংবিধান সমুন্নত রাখতে হবে। আমরা ন্যায় বিচার চাই। ন্যায় বিচার হলে নিম্ন আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার ৫ বছর সাজা হতো না। আপিল বিভাগেও জামিন স্থগিত হত না। তিনি বলেন, আমরা আশা করি বিচার ব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করবে। না করতে পারলে আইনজীবী-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে যা যা করা দরকার তাই তাই করবে। এজন্য কোন রাজনৈতিক ও বিচারপতিকেও ছাড় দেয়া হবে না। তিনি মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় সকাল আইনজীবীদের সকাল ৮টায় আদালতে আসার আহ্বান জানান।
সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, এখন আর শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে হবে না, লাঠি ও ঝাড়ু মিছিল করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে আন্দোলন করতে হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ