লালমনিরহাটে যৌতুকের জন্য প্রাণ গেল দুই সন্তানের জননীর
লালমনিরহাট সংবাদদাতা : সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নে শাহিদা বেগম কাজলী (২৮) নামে দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূ যৌতুকের জন্য প্রাণ দিল। সম্প্রতি লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। গৃহবধূ শাহিদা ওই ইউনিয়নের মানিক মিয়ার স্ত্রী ও উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের পশ্চিম খাটামারী এলাকার কাশেম আলীর মেয়ে।
নিহত গৃহবধুর বাবা কাশেম আলী জানান, চার বছর আগে উভয় পরিবারের সম্মতিতে হারাটি ইউনিয়নের নুরুল ইসলামের ছেলে মানিক মিয়ার সাথে তার মেয়ে শাহিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বণিবনা হচ্ছিল না। কারণে- অকারণে স্বামী মানিক মিয়া শশুর বাড়ির কাছে টাকা চাইতো। মানিক যৌতুকের জন্য প্রায়ই শাহিদাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। এরই মধ্যে তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়।
গত সোমবার (১৬ এপ্রিল) রাতে জামাই মানিক মিয়া মোবাইল ফোনে শশুরকে জানায়, কাজলীর অসুস্থতার কথা। পরদিন মঙ্গলবার সকালেই জামাই বাড়ীতে এসে বাবা কাশেম আলী উঠানে চৌকির ওপর মেয়ে শাহিদার লাশ দেখতে পায়। পরে তিনি মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন জানান। পরে চেয়ারম্যান থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবগত করেন। এদিকে নিহত গৃহবধূর স্বামী এলাকার কয়েকজন গ্রাম্য টাউট ব্যক্তিদের সহায়তায় লাশ দাফনের সব কাজ সম্পন্ন করে কবর স্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। ঠিক ওই সময় পুলিশ এসে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন ও সহায়তাকারী গ্রামবাসী পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখে। নিহতের পরিবারের দাবী শ^শুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে তার মেয়ে কাজলীকে হত্যা করেছে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ওসি (তদন্ত) উদয় কুমার মন্ডল বুধবার সকালে জানান, নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।