শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণার মাধ্যমে সরকারের পরাজয় আর জনগণের বিজয় হয়েছে -ব্যারিস্টার মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণার মাধ্যমে সরকারের পরাজয় হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এই আন্দোলনের মাধ্যমেই ক্ষমতা হারাতে পারে তা বুঝতে পেরেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। তাই আমি বলতে চাই, এটা জনগণের বিজয় হয়েছে। সরকারের পরাজয় হয়েছে। কারাবন্দী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে কোটা প্রথা বিরোধী আন্দোলনকারীদের মত গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলেও মত দেন তিনি।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘নির্বাচনে সেনা মোতায়েন: নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
 ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, এখনই গণমাধ্যমের খবরে দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে, বাংলাদেশে কোনো কোটা ব্যবস্থা থাকবে না। উনি শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছেন, এই কোটা আন্দোলন কত বেগবান হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছেন, এই আন্দোলন যদি চলে, তাহলে তো তাদের ক্ষমতায় থাকাটাই কঠিন হবে। আওয়ামী লীগ যে তাদের ক্ষমতা এই আন্দোলনের মাধ্যমেই হারাতে পারে তা তিনি বুঝতে পেরেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তাই আমি বলতে চাই, এটা জনগণের বিজয় হয়েছে। সরকারের পরাজয় হয়েছে।
 নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মওদুদ আহমদ বলেন, এভাবেই আগামীতে আমাদের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের নির্দলীয় সরকারের ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে এবং আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
 কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারীদের দাবিকে যৌক্তিক অভিহিত করে সাবেক আইনমন্ত্রী বলেন, এই কোটা সংস্কারের আন্দোলন এই সরকারের বিরুদ্ধে সারাদেশে মানুষ ও ছাত্রসমাজের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে। এটা শুধু কোটা নয়, তাদের (শিক্ষার্থী) মনে অনেক ক্ষোভ। তারা তো দেখছে- দেশ কিভাবে চলছে, দেশে কি ধরনের গণতন্ত্র আছে তারা জানে। আজকে কোটাকে কেন্দ্র করে এই যে আন্দোলন, এটার অনেক গভীর তাৎপর্য আছে বলে আমি মনে করি। এর মধ্য দিয়ে ছাত্র সমাজ সারাদেশের মানুষের মনের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি অবিলম্বে মেনে নেয়ার দাবিও জানান মওদুদ আহমদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বাসভবনে ভাংচুরের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এই যে ভিসির বাসা ভাংচুর হলো। তারা (সরকার) এখন চান যে, এটা তলিয়ে দেখতে হবে, এর মধ্যে নিশ্চয়ই অনেক কিছু আছে। পাকিস্তান আমলে আমরা যখন ছাত্র আন্দোলন করতাম আমাদের সবাইকে পাকিস্তান সরকার ও প্রশাসন বলতো এরা কমিউনিস্ট। আমাকে পর্যন্ত কমিউনিস্ট বলতো। কেনো কমিউনিস্ট? বলে যে সরকার বিরোধী হলেই কমিউনিস্ট।
 এখন আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থা হয়েছে ওইরকম। আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেই  বা তার  সমালোচনা করলেই সবাই রাজাকার। এই মতিয়া চৌধুরী (কৃষিমন্ত্রী) । আমি তো কারো নাম নিয়ে কিছু বলি না। আমার মনে হয় তার উচিত হবে তার পদত্যাগ করা। তা নাহলে সারা জাতির কাছে তাকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়া। কারণ এই ছাত্রসমাজ যারা আন্দোলন করছেন তাদেরকে রাজাকার বলে আমার মনে হয় উনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
 লেবার পার্টির ঢাকা মহানগর সভাপতি এসএম ইউসুফের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. ফরিদউদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ