ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক জনপদ
চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে কথিত আছে যে, এখানকার মল্লিক বংশের আদি পুরুষ চুঙ্গো মল্লিকের নামে এ জায়গার নাম চুয়াডাঙ্গা হয়েছে। ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তাঁর স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানার ইটেবাড়ি- মহারাজপুর গ্রাম থেকে মাথাভাঙ্গা নদীপথে এখানে এসে প্রথম বসতি গড়েন। ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে এ জায়গার নাম চুঙ্গোডাঙ্গা (Choonga danga) উল্লেখ রয়েছে। ফারসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় উচ্চারণের বিকৃতির কারণে বর্তমান চুয়াডাঙ্গা (Chuadanga) নামটা এসেছে। জেড.এ তোফায়েল তার Sociology of Kushtia বইয়ে এই মত সমর্থন করেছেন। এই অঞ্চলের প্রাচীন লোকজন এখনো চুয়াডাঙ্গাকে চুঙোডাঙ্গা উচ্চারন করে।
চুয়াডাঙ্গা নামকরণের আরো দুটি সম্ভাব্য কারণ প্রচলিত আছে। চুয়া < চয়া< চষা শব্দের অর্থ পরিস্কার। পরিস্কার ডাঙ্গা অর্থে এই উচুঁ জায়গাটির নামকরন হতে পারে। মতান্তরে, নদী বেষ্টিত এই উচুঁ ভুমিতে প্রচুর ইঁদুর ছিল। চুঙ্গোমল্লিক ইঁদুর দেখে বুঝেছিলেন জায়গাটি উচুঁ। বন্যার পানিতে ডোবে না বলেই ইঁদুরের অস্তিত্ব রয়েছে। ইঁদুরের উৎপাতের কারনেই জায়গাটির নাম চুহাডাঙ্গা > চুয়াডাঙ্গা হয়েছে।
১৮৬০ সালে চুয়াডাঙ্গা মহাকুমায় উন্নীত হয়। ১৮৬২ সালে রেলপথ চালু হলে মহাকুমা সদর দপ্তর দামুড়হুদা থেকে চুয়াডাঙ্গায় স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গাকে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী ঘোষনা করা হয়। ১৯৮৪ সালে আজকের চুয়াডাঙ্গা জেলায় উন্নীত হয়।