বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে শুরু কমনওয়েলথ গেমস

কামরুজ্জামান হিরু, গোল্ডকোস্ট, অস্ট্রেলিয়া থেকে :  বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে শুরু হলো ২১তম কমনওয়েলথ গেমসের । চোক জুড়ানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পর্দা উঠে ১১ দিনব্যাপী এই ক্রীড়া মহাযজ্ঞের।  এমনিতেই পর্যটন নগরী। সর্বত্রই ঝকঝকে, তকতকে। বিশ্বের শীর্ষস্থনীয় পর্যটন নগরী।  অস্ট্রেলিয়ার সেই পর্যটন নগরী গোল্ডকোস্টে রাতের আকাশ রঙিন করে তুলে ২১তম কমনওয়েলথ গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। আগে থেকেই নির্ধারণ ছিল ছিল কারারা স্টেডিয়ামে গেমেসের উদ্বোধন হবে। সে অনুযায়ী গোটা স্টেডিয়ামের চতুর্দিকে ছিল বাড়তি নিরাপত্তা। এরই মধ্যে স্বাগতিক অস্ট্রেরিয়ার স্বেচ্ছাসেবকদের চমৎকার তৎপরতার মধ্যে সময়ের আগেই পুরো স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। স্থানীয় সময় রাত আটটার পর মাঠে প্রবেশ করেন ইংল্যান্ডের প্রিন্স চার্লস। সাথে ছিলেন স্ত্রী ক্যামিলা পারকার। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যায় তাকে স্বাগত জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশনের সভাপতি লুইস মার্টিন ও গোল্ডকোস্ট কমনওলেয়থ গেমসের চেয়ারম্যান পিটার বিওয়েটে। সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য রাখেন গোল্ডকোস্টের মেয়র টম টেট। এরপর অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলন সম্পন্ন হওয়ার পর আতাশবাজি পুড়িয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ববি অ্যালুর কন্ঠে ভেসে আসে ‘উকুলেলে’ শিরোনামের গান। গানের সঙ্গে এক দল পারফর্মার চমৎকার উপস্থাপনায় তুলে আনা হয় গোল্ডকোস্টের সমুদ্র তলের বিনোদন ও সার্ফিংয়ের দৃশ্য। পরের উপস্থাপনায় ছিল সুমদ্র স্নানে এসে ডুবন্ত পর্যটকদের কিভাবে উদ্ধার করে লাইফ গার্ডরা। এর সঙ্গে মিশেল ছিল স্থানীয় আদিবাসীদের সংস্কৃতি। এই দুই উপস্থাপনার পরেই শুরু হয় অ্যাথলেটদের মার্চ পাস্ট। প্রথমে মাঠে প্রবেশ করে গত আসরের আয়োজক দেশ স্কটল্যান্ড। মার্চ পাস্টেও প্রাধান্য দেয়া হয় সার্ফিংকে। সার্ফিংময় ওই মার্চ পাস্টে পতাকা বাহকের সঙ্গে দেশের নাম সম্বলিত প্লেকার্ডের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় সার্ফিং বোট। এরপর একে একে মাঠে প্রবেশ করে কানাডা, ইংল্যান্ড, জিব্রাল্টা, নিউজার্সি, মাল্টা, উত্তর আয়ারল্যান্ডসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশের অ্যাথলেটরা। এশিয়া অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে মাঠে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। কৃতি শ্যূটার আবদুল্লাহেল বাকী এ সময় বহন করে নিয়ে যায় লাল সবুজের পতাকা। এ সময় দলের অগ্রভাগে ছিলেন সেফ দ্যা মিশন বাংলাদেশ শ্যূটিং ফেডারেশনের সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরীসহ কনটিনজেন্টভুক্ত বাংলাদেশ দলের অ্যাথলেট ও কর্মকর্তারা। সবশেষে মাঠে প্রবেশ করে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিশাল বহর। প্যারা কমনওয়েথল গেমসের প্রতিযোগীদের পর শুরু হয় উদ্বোধনী ঘোষণা। উদ্বোধন করেন প্রিন্স চার্লস। তিনি বলেন, আসুন আমরা এক হয়ে উপভোগ করি ক্রীড়ার এই মহাযজ্ঞ। এরপর দু’টি সঙ্গীত পরিবেশনের পর অংশগ্রহণকারী দেশের পতাকা নিয়ে উপস্থাপন করা হয় আরেকটি চমৎকার পরিবেশনা। এ সময় কমনওয়েলথ গেমস ফাউন্ডেশনের পতাকা বহন করে নিয়ে আসেন আগের আসরে স্বণর্ পদক জয়ী ছয় শীর্ষ ক্রীড়াবিদ। পরে উত্তোলন করা হয় পতাকাটি। অস্ট্রেলিয়ান অ্যাথলেট লিসা আলেকজান্ডার শপথ বাক্য পাঠ করান। এরপর গেমসের মশাল নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন অলিম্পিক ও কমনওয়েলথ স্বর্ণ বিজয়ী কার্ট ফেয়ারলি। এরপর দেশটির তারকা অ্যাথলেট ব্র্যাড মিগি, লিজ এলিজ ও  ব্রেন্ট লিভারমোররের হাত ঘুরে সবশেষে মশাল পৌঁছে সার্লি পিয়ারসনের কাছে। তিনি মশালটি তুলে দেন গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমস কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পিটার বিওয়েটে ও কমনওলেথ গেমস ফেডারেশনের সভাপতি লুইস মর্টিনের হাতে। তারা দু’জন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লসের হাতে তুলে দেন বার্কিমহ্যাম প্যালেস থেকে কমনওযেলথভুক্ত দেশ ঘুরে গোল্ড কোস্টে পৌঁছানো মশালটি। এরপর তিনি সক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।  এরপর আতশবাজি আর অস্ট্রেলিয়ানদের নানান আকর্ষণীয় নৃত্য, গান আর ডিস্পেলে সবাইকে আনন্দে আত্মহারা করে তুলে। উপস্থাপিকা প্রায় তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানের শেষ ঘোষণার আগে আহ্বান জানান, ১১ দিনব্যাপী এই গেমসে ডুবে যাওয়ার।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ