শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

মার্কিন অস্ত্রেই রক্তাক্ত ইয়েমেনের বেসামরিক লোকজন----অ্যামনেস্টি

২৩ মার্চ, ইন্টারনেট : ইয়েমেনে অভিযানে ব্যবহার করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে কেনা অস্ত্র।

 আর এই বোমা ও বিমান হামলার আঘাতেই প্রাণ হারাচ্ছেন হাজার হাজার বেসামরিক। গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এসব তথ্য তুলে ধরে।

অ্যামনেস্টি জানায়, গত তিন বছর ধরে চলা ইয়েমেনে ভয়াবহ যুদ্ধের আলামত সংগ্রহ করছে তারা। ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ থেকে শুরু এই যুদ্ধে সবপক্ষ কিভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করেছে তা খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি। সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের পরিচালক লিন মালুফ বলেন, ইয়েমেনের যুদ্ধে কোনও উন্নতি হচ্ছে না সব পক্ষের দ্বন্দ্বে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। স্কুল, হাসপাতাল ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ জীবন দিয়েছেন। ঘরহারা হয়েছেন লাখো মানুষ। অনেক মানুষের প্রয়োজন মানবিক সহায়তা। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যে সৌদি জোটের কাছে আসা অস্ত্র মূলত ইয়েমেনে বেসামরিকদের হত্যার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্য নয়, ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালি থেকেও আসছে অস্ত্র।

বিশ্ব অস্ত্র সমঝোতাকে কোনও তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না।’ ২০১৭ সালের আগস্টে সানায় ১৬ জন নিহত হয়েছলেন। আহত হয়েছিলেন ১৭ জন। হতাহতের মধ্যে অনেক শিশুও ছিলেন। অ্যামনেস্টির দাবি, হামলায় ব্যবহৃত বোমাটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রস্তুত করা হযেছে। অ্যামনেস্টির ভাষ্য অনুযায়ী, সংঘাত শুরু পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৬টি যুদ্ধআইন বহির্ভূত হামলার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। 

বেসামরিক নিহত হয়েছেন ৫১৩ জন। আহতের সংখ্যা ৩৭৯। যুদ্ধ আইন লঙ্ঘন করেছে হুথি বিদ্রোহীরাও। প্রায়ই বেসামরিকদের লক্ষ্য করে তারা হামলা চালায় বলে দাবি অ্যামনেস্টির। বিশেষ করে তাইয়াজ শহরে বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি। সানাসহ যেসব অঞ্চল তাদের দখলে সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনেরও অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতার, গুম হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ।

২০১৮ সালে হুথি নিয়ন্ত্রিত বিশেষ আদালতে অন্তত চারজনকে মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা জানায়, বিচারপূর্ববর্তী আটক, কারাগারে নির্যাতন, গুম ও হত্যার অভিযোগ রয়েছ তাদের কাছে।

ইয়েমেনে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এই আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে একে যুদ্ধাপরাধ বলে গণ্য করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

মানবেতর পরিস্থিতি : ইয়েমেনের মানবেতর পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছে অ্যামনেস্টি। তারা জানায়, বিশ্বের অন্যতম মানবেতর পরিস্থিতি এখন ইয়েমেনে। দেশটির ২ কোটি ২২ লাখ মানুষের জরুরি মানবিক সহায়তা দরকার। ১০ লাখের বেশি মানুষ কলেরায় আক্রান্ত। এই দুর্যোগ মনুষ্যসৃষ্ট। গত বছর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের লক্ষ্য করে হুথিরা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে ইয়েমেনে অবরোধ আরোপ করে সৌদি জোট। ত্রাণ ও ওষুধ আটকে যাওয়ায় আরও ভয়াবহ হয় পরিস্থিতি। পরে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে অবরোধ শিথিল করে সৌদি আরব।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ