শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

খুলনা সিটিতে মশার রাজত্ব

খুলনা অফিস : খুলনা মহানগরীতে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই বাড়ি-ঘর সব মশার দখলে চলে যায়। সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিতে হয়। না হলে বিদ্যুতের আলোয় বাইরে থেকে শত শত মশা এসে ঘরে আশ্রয় নেয়। যদিও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কনজারভেন্সি বিভাগ দাবি করছে মশা নিধনের জন্য নগরীতে ৪১টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। কিন্তু সেগুলো কাগজে কলমে রয়েছে বলে মত নগরবাসীর। নগরবাসীর অভিযোগ, নগরীর অধিকাংশ ড্রেন-নর্দমায় ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ। ড্রেনের আবর্জনা সময়মত পরিষ্কার করা হয় না। সেখানে মশার বংশ বৃদ্ধি হলেও তা ধ্বংস করা হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, দেশের তৃতীয় বৃহত্তম সিটি হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের অবস্থান। এর আয়তন ৪৫ দশমিক ৬৫ বর্গকিলোমিটার। লোকসংখ্যা ১৫ লাখের উপর। ৩১টি ওর্য়াডে বিভক্ত। বৃহৎ আয়তনের এই সিটির অধিবাসীরা বর্তমানে মশার জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। দিনে রাতে সব সময়ই মশার উৎপাত রয়েছে। বাসাবাড়িতে দিনের বেলায়ও শিক্ষার্থীদের মশারি টানিয়ে পড়ালেখা করতে হচ্ছে। তাছাড়া সরকারি বেসরকারি অফিস আদালতে কাজ করতে হচ্ছে মশার কয়েল জ্বালিয়ে বা মশা নিধক এরোসল ব্যবহার করে।
সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মোল্লা আরিফুর রহমান সেতু বলেন, আমার পরীক্ষা আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু। এখন দিনের বেলাতেও বই পড়া যায় না। মশার কামড় থেকে রেহাই পেতে গুডনাইট ¯েপ্র ব্যবহার করি। কিন্তু বিদ্যুৎও অনেক সময় পাওয়া যায় না। মশার কয়েল জ্বালালে চোখ পড়ে, কাশি হয়। এর মধ্যেও কয়েল জ্বালাতে হয়।
একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা দৃষ্টি জানান, অফিসিয়াল সকল কাজ করতে হয় তাকে ল্যাপটপে। কীবোর্ডে হাত রেখে কাজ করতে গিয়ে তাকে বারবার হাত নেড়ে মশা তাড়াতে হচ্ছে। অনেকর এলার্জি থাকায় মশার কয়েল জ্বালিয়ে কাজ করতে পারেন না। অফিস কক্ষটিতে কাজ করতে হয় জ্বানালা খুলে তাই এরোসল ব্যবহার করতে পারেন না। মশার উৎপাত ভনভনানি আর কামড়ে শুধু ইব্রাহিম কিংবা স্বপন নন প্রায় প্রতিটি নাগরিকই যন্ত্রণায় রয়েছেন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কঞ্জারভেন্সি অফিসার মো. আনিসুর রহমান বলেন, সিটি কর্পোরেশন নগরীতে মশার উপদ্রব কমাতে বদ্ধপরিকর। নগরীর ৩১টি ওর্য়াডে ৪১টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশা নিধনের জন্য ওষুধ ¯েপ্র করা হয়। তিনি জানান, সিটি কর্পোরেশ এখন নিজেরাই পদ্মা অয়েল থেকে ডিজেল ও কেরোসিন কিনে থাকে। প্রতি লিটার ডিজেলে ৮০ মিলিলিটার সাইফারমেথ্রিন কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করা হয়। তাছাড়া এক ধরনের কালো তেল ছিটানো হয়। কালো তেল আঠালো হওয়ায় মশা তেলে আটকে যায়।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, শীতের শেষে গ্রীষ্মের শুরুতে মশার উপদ্রব বাড়ে। এখন মশার প্রজনন মওসুম। আগামী বর্ষা মওসুম শুরুর আগ পর্যন্ত এ অবস্থার মোকাবেলা করতে হবে। মশা নিধনে নগরীর ড্রেন, নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত স্প্রে করা হচ্ছে মশা নিধক ওষুধ। তিনি বলেন, মশার বংশ বিস্তাররোধে শীঘ্রই নগরীতে শুরু করা হবে ক্রাশ প্রোগ্রাম।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ