ত্রাস ও ভীতি ছড়িয়ে আ’লীগ দেশে আবারো বাকশাল কায়েম করতে চায়
স্টাফ রিপোর্টার : সরকার ত্রাস ও ভীতি ছড়িয়ে দেশে আবারো একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চায় অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে তারা (আ’লীগ) সারা দেশে একদলীয় শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা নিজেরাই থাকবে, অন্য কেউ থাকবে না এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমরা সংঘাত এড়িয়ে চলছি। আমরা গণতন্ত্রের স্বীকৃত বিরোধী দলের অধিকারগুলো প্রয়োগ করতে চাই। সভা-সমাবেশ বিরোধী দলের সার্বজনিন অধিকার। এটি কোনো বেআইনি কর্মসূচি নয়। সরকারি দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা পুরো রাস্তা দখল করে মিছিল করবেন, সেটা আইনি, আপনারা সোহরাওয়ার্দি উদ্যান ও তার পাশে-পাশে মিছিল করবেন সেটা আইনি। আর আমরা জনসভা করতে যাবো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে, সেটা হয়ে যাবে বেআইনি। গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের রাজনীতি ‘গোয়েন্দা নিয়ন্ত্রণে’ কিনা প্রশ্ন তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের এখনকার এই রাজনীতি কী গোয়েন্দারা চালাচ্ছে? তাদের ওপর ভিত্তি করে একটি বিরোধী দলের সভা করতে দেয়া না দেয়ার সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে ? তিনি বলেন, গত কয়েকবছর ধরে গোটা দেশকে সত্যিকার অর্থেই রাজনৈতিক বিবর্জিত করে ফেলা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো অধিকার নেই, রাজনৈতিক নেতাদেরকে মিথ্যা মামলায় হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে, কারাগারে নেয়া হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের কোনো অধিকার বলতে কিছু নেই।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, তারা (সরকার) যেহেতু তাদের সমালোচনার অধিকার বন্ধ করে দিচ্ছে, যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবার অধিকার ও রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকার ত্রাস ও ভীতি ছড়িয়ে আজকে তারা সারা দেশে একদলীয় শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্যে তারা নিজেরাই থাকবে, অন্য কেউ থাকবেনা এই ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। আমরা সংঘাত এড়িয়ে চলছি। আমরা গণতন্ত্রের স্বীকৃত বিরোধী দলের অধিকারগুলো প্রয়োগ করতে চাই। সভা-সমাবেশ বিরোধী দলের সার্বজনিন অধিকার। এটি কোনো বেআইনি কর্মসূচি নয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তবের প্রতি ইংগিত করে তিনি বলেন, শুনলে অবাক লাগে আওয়ামী লীগের নেতাদের কথা যে, বেআইনি কর্মসূচি হলে তো পুলিশ বাঁধা দেবেই। কোনটা আইনি , কোনটা বেআইনি। আপনাদের (ক্ষমতাসীন দল) জন্য পুরো রাস্তা দখল করে মিছিল করবেন, সেটা আইনি, আপনারা সোহরাওয়ার্দি উদ্যান ও তার পাশে-পাশে মিছিল করবেন সেটা আইনি। আর আমরা জনসভা করতে যাবে সোহরাওয়ার্দি ভেতরে সেটা হয়ে যাবে বেআইনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনসভা করার, সমাবেশ করার যে অধিকার আমাদের সংবিধানে রয়েছে, সেই অধিকার বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই। আমরা কিন্তু অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথে আমাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, ন্যুনতম যে অধিকারটুকু আছে সেটা পালন করতে দেয়া হোক।
খালেদা জিয়ার মামলার জামিনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক মাসের ওপরে হয়ে গেলো আমাদের দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এখনো জামিন পাননি। এটা জামিনযোগ্য। সব আইনজীবীরা বলছেন, এটা জামিন না দেয়ার কোনো কারণ নেই। নথি তলব করার ব্যাপারটা অনেকের কাছে অস্বাভাবিক হয়ে গেছে। কালকেও (রোববার) করতে পারেননি। আজকে বলেছেন যে, দেবেন। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি বলেই আমরা আইনের প্রক্রিয়ায় গেছি। আশা করি, দেশনেত্রীর যে ন্যুনতম আইনি অধিকার রয়েছে সেটা তিনি পাবেন। আমাদের প্রত্যাশা তিনি(দেশনেত্রী) জামিন পাবেন এবং তিনি আমাদের মাঝে আসবেন। যদিও দুপুরে খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে কুমিল্লার একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব এএসএম আবদুল হালিম ও সাবেক সচিব অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেইন সুজাউদ্দিন উচ্চ আদালত কর্তৃক আগাম জামিন আদেশ নিয়ে নিম্ন আদালতে গেলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। রাজধানীর মিরপুর বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ব্যাপক মানুষের বাড়ি-ঘর পুঁড়ে যাওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে অনতিবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্থদের পূর্ণবাসনের দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
আওয়ামী লীগকে নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারী সরকার হিসেবে অভিহিত করে দলটির মহাসচিব বলেন, সরকার বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে কদাচিৎ অনুমতি দিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে সমাবেশস্থলে আক্রমণ চালিয়ে দলের নেতাকর্মীদেরকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে আটক করা হয়। যা বর্তমান দুঃশাসনের মধ্যেও এক ভয়ঙ্করতম কালো অধ্যায়।