বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

৭ মার্চের ভিডিও ফুটেজে নারী লাঞ্ছনার প্রমাণ মিলেছে -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : ৭ মার্চ রাজধানীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশের দিন বাংলামোটর এলাকায় একটি মিছিল থেকে এক কিশোরীকে লাঞ্ছনার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। অবশ্য ভিডিও পর্যালোচনা করে লাঞ্ছনাকারীদের শনাক্তের কাজটি কতদূর এগিয়েছে সে বিষয়ে কিছুই জানাননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
গত ৮ মার্চ এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ওই ঘটনার ভিডিও মিলেছে। তবে ভিডিওতে কী আছে, সেটা জানাননি তিনি। গতকাল মন্ত্রী বলেন, ‘ভিকারুন্নেসা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীকে বেশ কয়েকজন ওড়না ধরে টানাটানি করেছে এ ঘটনা সত্য। ভিডিও ফুটেজ দেখেছি, সেখানে দেখা গেছে।’
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ারর্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণে বুধবার একই ময়দানে জনসভা করে আওয়ামী লীগ। আর এ জন্য আশপাশের বিভিন্ন সড়কে যান চালাচল নিয়ন্ত্রিত ছিল। এ কারণে হেঁটে চলতে বাধ্য হয়েছে মানুষ। আর চলার পথে জনসভায় আসা নেতা-কর্মীদের হাতে বেশ কয়েকজন নারী হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে ভিকারুন্নেসার ছাত্রী অদিতি বৈরাগী ফেসবুকে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে যায়। অদিতি জানান, বাংলামোটর এলাকায় সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে যাওয়া একটি মিছিল থেকে তাকে হয়রানি করা হয়েছে। তাকে থাপ্পরও দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভয়াবহ বিপর্যস্ত জানিয়ে অদিতি এমনও লিখেন ‘আমি এই শুয়রদের দেশে থাকব না।’
অদিতির এমন প্রতিক্রিয়ায় তোলপাড় চলে দেশে। সরকারের পক্ষ থেকে ভিডিও ফুটেজ দেখে দায়ীদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভুক্তভোগী আদিতি বৈরাগীর বাবা অনাদি রঞ্জন বৈরাগী রমনা থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে মামলাও করেছেন। আর গোয়েন্দারা অনুসন্ধান শুরুও করেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ ওই মেয়ের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলেছে। কারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।’ ‘সেদিন সমাবেশে নারী-পুরুষের ঢল নেমেছিল। কারা, কোন উদ্দেশ্যে এমন কাজ করল সেটি আমাদের বের করতে হবে।’
অবশ্য কেবল অদিতি না। সেদিন ইশরাতুল শোভা, আফরিন আসাদ মেঘলাসহ আরও বেশ কয়েকজন তরুণীও ফেসবুকে একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন।
একজন লিখেছেন ‘আল্লাহ কেন মেয়েদের দুইটা হাত দিল? দুইটা হাত দিয়ে এতগুলো হাত থেকে বুক, পেট বাঁচাব, ওড়না ধরে রাখব নাকি তাদের হাতগুলো সরাব?’
অন্য একজন লিখেন, ‘হল থেকে বের হয়ে কোনও রিকশা পাইনি। কেউ শাহবাগ যাবে না। হেঁটে শহীদ মিনার পর্যন্ত আসতে হয়েছে। আর পুরোটা রাস্তাজুড়ে ৭ মার্চ পালন করা দেশভক্ত সোনার ছেলেরা একা মেয়ে পেয়ে ইচ্ছামতো টিজ করছে। নোংরা কথা থেকে শুরু করে যেভাবে পারছে টিজ করছে।’
‘যাদের ধরা হচ্ছে তারা জ্বালাও-পোড়াওয়ে জড়িত’
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির কর্মসূচি থেকে যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সবাই নানা সময় জ্বালাও-পোড়াওয়ে জড়িত।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কাউকে ধরা হচ্ছে না। যারা বিভিন্ন সময় বাস ভেঙেছে, বাস পুড়িয়েছে, অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, পুলিশের অস্ত্র ভেঙেছে, পুলিশকে মারধর করেছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা না থাকলে কাউকে শুধু শুধু গ্রেফতার করছে না পুলিশ। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ