শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিদেশে কর্মী প্রেরণে সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না -প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও অধিকতর সহজ, নিরাপদ, স্বচ্ছ, টেকসইসহ অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে। প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরি, উপযুক্ত কর্ম পরিবেশ, সঠিক মজুরি নির্ধারণ করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। বিদেশে কর্মী প্রেরণে কোনো সিন্ডিকেট গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কোনো সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। দুষ্ট চক্রের হাত থেকে অভিবাসন প্রক্রিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে জার্নালিস্ট ফোরাম অন মাইগ্রেশন (জেএফএম) আয়োজিত ‘বিশ্ব শ্রমবাজার ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি এসব কথা বলেন।  সংগঠনের সভাপতি মনির হোসেন -এর সভাপতিত্বে সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শ্রম-অভিবাসন বিশ্লেষক ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির। আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হক ও সহ-সভাপতি মোরছালীন বাবলা, আরটিভির বার্তা সম্পাদক আক্তার হোসেন, ইনকিলাবের সিনিয়র রিপোর্টার সামসুল ইসলাম, ইনডিপেন্ডেট পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র রিপোর্টার মো. সাজ্জাদ হোসেন।  
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, আমাদের কর্মীরা বিদেশে অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করছে। বর্তমানে এই প্রোফেশনের সাথে অনেক ভালো ও শিক্ষিত উদ্যোক্তরা যুক্ত হওয়ায় এই খাতে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, প্রবাসে নারী কর্মীদের সুরক্ষায় তাদের বিদেশে পাঠানোর আগে অধিকতর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে প্রেরণ করা উচিত। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি কুয়েতের শ্রমবাজারের জটিলতা নিরসণে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন।
এর আগে মূল প্রতিপাদ্যে শ্রমঅভিবাসন বিশ্লেষক, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গত বছর রেকর্ডসংখ্যক সাড়ে দশ লক্ষ কর্মী প্রেরণ করার সফলতা থাকলেও অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাটা ছিল আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। তবে জিরো মাইগ্রেশনে নারী কর্মী প্রেরণ আমাদের বড় এক সাফল্য। যার ফলে স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা অথবা হতদরিদ্র নারীদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুণ এক প্রভাব ফেলছে। অদক্ষ কর্মী প্রেরণের পাশাপাশি বেশি করে দক্ষ কর্মী ও প্রফেশনালস প্রেরণ বেশি মনোযোগী হতে হবে। নতুন শ্রমবাজার তৈরি, শ্রমিকের উপযুক্ত মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা জোরদারের জন্যে মাইগ্রেশন ডিপ্লোমাসির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, প্রবাসী পরিবারের নিরাপত্তা, শ্রম অভিবাসীদের খাতওয়ারি ডাটাবেজ, বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ, অভিবাসন খাতে বাজেট বৃদ্ধি, রিটার্নি মাইগ্রেন্টদের জন্যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাসহ এই খাতের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আরো বেশি নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার আফিয়া সৌদি থেকে ফিরে সেখানকার করুণ বর্ণনা তুলে ধরেন। মন্ত্রীর সামনেই তার বর্ণনা শুনে উপস্থিত সবাই হতবাক হয়ে যান।
আফিয়া জানান, সৌদি আরবে যেসব নারীরা যাচ্ছেন সবাইকে খারাপ কাজে ব্যবহার করা হয়। তাকেও খারাপ কাজ করতে বাধ্য করতে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। না খাইয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি তাকে হাত পা বেধে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। এ রকম হাজার হাজার বাংলাদেশী সেখানে আটকে রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেন সৌদি ফেরত এই নারী। আবদুল হক নামের এক দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে যান আফিয়া। আফিয়ার কথা শুনে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান মন্ত্রী। 
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী জেএফএম’র ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন। অনুষ্ঠানে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক ও বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ