শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনেই ১৪ উইকেট পতন

সংক্ষিপ্ত স্কোর : প্রথম দিন শেষে

শ্রীলংকা------২২২/১০ (৬৫৩ ওভার)

বাংলাদেশ-----৫৬/৪ (২২ ওভার)।

রফিকুল ইসলাম মিঞা : চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হলেও ঢাকা টেস্টে রেজাল্ট হবে এটা আগেই জানিয়েছেন দুই অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর দিনেশ চান্ডিমাল। ঢাকা টেস্টে প্রথম দিন শেষে এখন বলাই যায়, এই টেস্টে রেজাল্ট হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ ঢাকা টেস্টে প্রথম দিনেই পড়েছে মোট ১৪ উইকেট। গতকাল টস জিতে মিরপুরে আগে ব্যাট করে সফরকারী শ্রীলংকা অলআউট হয়েছে ২২২ রানে। জবাবে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ২২ ওভারে ৪ উইকেটে ৫৬ রান করে দিন পার করেছে। ফলে এই টেস্টে রেজাল্ট হওয়া ছাড়া বিকল্প কি থাকতে পারে? প্রথম দিনে শ্রীলংকার বিপক্ষে বোলাররা ভালো করলেও ব্যাট হাতে ভালো করতে পারেনি টাইগার ব্যাটসম্যানরা। ফলে প্রথম দিনে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত চার ইইকেট হারায় টাইগাররা। তাই দিনের শুরুর মতো শেষটা হলো না টাইগারদের। ফলে ৬ উইকেট হাতে রেখে এখনও ১৬৬ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

গতকাল শ্রীলংকাকে ২২২ রানে অলআউট করে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম দুই ওভারে আউট হন দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ও চট্টগ্রাম টেস্টে আলো ছড়ানো মুমিনুল হক। প্রথম ওভারেই সুরাঙ্গা লাকমলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ৩ রানে বিদায় নেন তামিম। আর পরের ওভারে রানআউট হন মুমিনুল হক। চট্টগ্রামে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া মুমিনুল রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন। দলের সেরা এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ে দলের হাল ধরতে পারেননি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও। বাজেভাবে আউট হয়েছেন মুশফিক। লাকমলের বল ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু স্টাম্প ভাঙে বল। ২২টি বল খেলে মাত্র ১ রান করেন মুশফিক। ফলে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে স্বাগতিকরা। তবে দলের এই বিপর্যয়ে হাল ধরতে চেয়েছিলেন ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। ৩৩ রান করে এই জুটি। তবে ১৯ রানে ইমরুলকে এলবি আউট করেন দিলরুয়ান পেরেরা। ফলে প্রথম দিনেই ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। তবে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা মিরাজকে নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেন লিটন। ৩টি চারে ৪৩ বলে ২৪ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন লিটন। ৫ রানে অপরাজিত মিরাজ। শ্রীলংকার লাকমল ২টি ও পেরেরা ১টি উইকেট নিয়েছেন।    

এর আগে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে রাজ্জাক ও তাইজুলের স্পিনে অসহায় হয়ে পড়ে শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানরা। দু’জনে চারটি করে উইকেট নিয়ে ৬৫.৩ ওভারে তাদের গুটিয়ে দেন ২২২ রানে। ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় দলটি। রাজ্জাক নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে দিমুথ করুনারতেœকে স্টাম্পিং করে বিদায় করেন। কিন্তু ক্রিজে নেমে দলকে এগিয়ে নেযার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। এই বিপজ্জনক জুটি বেশি দূর যেতে পারেনি। ধনঞ্জয়াকে ১৯ রানে স্লিপে সাব্বির রহমানের ক্যাচ বানান তাইজুল। তাদের জুটিটা ছিল ৪৭ রানের। দানুশকা গুনাথিলাকাকে নিয়ে কুশল আরেকটি প্রতিরোধ গড়েছিলেন। রাজ্জাক সেটা ভেঙে দেন তার ষষ্ঠ ওভারে। প্রথম সেশন শেষ হওয়ার আগে রাজ্জাক জোড়া আঘাত করেন শ্রীলংকার ব্যাটিং লাইন আপে। প্রথম দুই বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পান এ স্পিনার। ২৬ বলে ১৩ রান করে মুশফিকের কাছে ক্যাচ দেন গুনাথিলাকা। ফলে ভাঙে ৩৫ রানের জুটি। মাঠে  নেমে প্রথম বলেই দিনেশ চান্ডিমাল বোল্ড। রাজ্জাকের বল বুঝে ওঠার আগেই তার স্টাম্প  ভেঙে যায়। বাংলাদেশী স্পিনার হ্যাটট্রিকের সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি রোশেন সিলভা বল ঠেকিয়ে দিলে। তবে দ্বিতীয় সেশনেও দারুন শুরু হয় টাইগারদের। ৮১ বলে পঞ্চম ফিফটি করা কুশল থামেন লাঞ্চের পরপরই। প্রথম সেশনে তিন উইকেট নেওয়ার পর রাজ্জাক দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই ফেরান তাকে। ৬৮ রানে বোল্ড হন লংকান এই ওপেনার। ফলে এক ইনিংসে প্রথমবার ৪ উইকেট পান রাজ্জাক। পরের ওভারেই মাত্র তিন বল খেলে তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হন নিরোশান ডিকবেলা ১ রান করে। দলীয় ১১০ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলংকার। তবে দিলরুয়ানকে নিয়ে রোশেন ৫২ রানের একটি জুটি গড়েন। তবে এই জুটি ভেঙে দেন তাইজুল। দিলরুয়ানকে ৩১ রানে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেটটি নেন এই স্পিনার। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে একটি উইকেট নেন মোস্তাফিজ। তার নবম ওভারের প্রথম বলে আকিলা ধনঞ্জয়াকে ২০ রানে  মুশফিকের ক্যাচ বানান তিনি। আর শেষ সেশনের দ্বিতীয় ওভারে রঙ্গনা হেরাথকে মাত্র ২ রানে ফেরান। তবে তাইজুলের বলে রোশেন ফিরলে ২২২ রানে শেষ হয় শ্রীলংকার ইনিংস। ১২৪ বল খেলে ৫৬ রান করে তাইজুলের বলে লিটনের ক্যাচ হন রোশেন। বাংলাদেশের পক্ষে রাজ্জাক ও তাইজুল চারটি করে উইকেট নেন। দুুুুটি উইকেট নেন মোস্তাফিজ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ