কবিতা
অধিকার
আব্দুল হালীম খাঁ
ক্ষুধার্ত এক রোহিঙ্গা বললো
কবি, আমার জন্য একটা কবিতা লিখো
আমি স্বদেশ থেকে বিতাড়িতÑ মজলুম।
হায়েনেরা আমাদের ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে।
গুলিখাওয়া আহত এক রোহিঙ্গা ভাই বললো
আমার হাতে একটা গ্রেনেট দাও
আমি আমার দেশে যেতে চাই
ধর্ষিতা এক রোহিঙ্গা নারী বললো
আমি লুণ্ঠিত অপমাণিত
আমি বিচার চাই।
সাত বছরের মাতৃ পিতৃহীন এক শিশু
কেঁদে কেঁদে এসে বললো
আমার মা-বাবাকে এনে দাও।
আমি নাফ নদীকে বললাম
বলো তো এর সমাধান কোথায়?
নদী ঢেউ তুলে গর্জে ওঠে বললো:
দুর্বলের কোনো অধিকার নেই
শক্তি দিয়েই অধিকার আদায় করতে হয়।
সৌরভ
মালা মাহমুদ
বলুন তো দেশটা চলছে কেমন
ভোরের বাগানে কেমন ফুটছে ফুলগুলো
লাল না সাদা নীল না হলুদ
নীল না লাল না হলুদ রক্ত লাল।
বলুন তো রৌদ বৃষ্টি খরচা হচ্ছে কেমন
বিনিময়ে কতটা জমছে অর্থ কড়ি
কতটা ভাঙা বাড়ীঘর হয়েছে মেরামত
কতটা মোঠা পথে পড়ছে মায়াবী কংক্রিট।
বলুন তো উন্নয়নের ছোঁয়ায়
কতটা খাল বিল হয়েছে নদী পদ্মা
কতটা বালুচর কেটে ইলিশ মাছ
অবাধে ভাসাচ্ছে তার ফাতনা ও লেজ
আসলেই মুখে মুখে এগুচ্ছে দেশ
মূলত মানুষ মাত্রই আছে দুঃখ কষ্টে বেশ।
সবুজ পতাকা
তাসনীম মাহমুদ
(তাঁর জন্য; যাকে আমার প্রয়োজন সকাল-সন্ধ্যা-সাঁঝে)
সিড়ির ধাঁপে যে অন্ধকার রয়েছে
ঘাপটি মেরে
ক্লাইভের পদচারণ হতে আজ অবধি;
তার প্রতিটি চিহ্নের সাথে
আমার প্রতিটি তন্তুর অহর্নিশ যুদ্ধ।
কে বলে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন- ঘুমিয়ে পড়েছি?
আমি- তো জেগে উঠেছি কতবার--
হয়তো আবার উঠব জেগে।...
হয়তো কেন?
চোরা- চিকন পথে যারা হেঁটে চলে
তাদের যাত্রা- তো নিত্যকার পোশাক বদলের মতো;
পাহোমের লোভ যেখানে মীরজাফরে দোদুল্যমান!
আর যারা বীর;
যারা সৈয়দ আহমদ- যারা মীর কাশিমে
কিংবা যারা টিপুসুলতানে প্রশস্ত--
তারা- তো বীর; তারাই বীর
তাদের যাত্রা মহাক্ষণে।...
কে যাও তুমি
ভুলের তরীতে ভুলভাল পাল তুলে?
দ্বোর খোল; দেখ ঐ মাস্তুলে
ঝা-াবাঁধা আজও।...
সূর্য বাকি নেই পূর্ব গগনে ডানা মেলতে
একটুখানি বাতাসের যা প্রয়োজন।
এখন এসো স’ব এ মহাযাত্রায়; মহাক্ষণে
স্বার্থে স্বার্থে হানো আঘাত; বিলাসে মারো ডোররা!
বিশ^াস রাখো বন্ধু!
খানিকটা ঘাম; খানিকটা রক্ত
তোমাকে এনে দেবে ফের
বখতিয়ারের সবুজ পতাকা।