শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

পাঁচ দিনেও কোন আশ্বাস মিললো না বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের উদ্যোগে বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে অনশনরত শিক্ষকরা। ছবিটি গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে তোলা -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে ৫ দিন ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা কারো কাছ থেকে কোন আশ্বাস পাননি। তবে দাবি পূরণে তারা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস চান।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গত ১০ জানুয়ারি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এক দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। তবে ১৫ জানুয়ারি থেকে বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের ব্যানারে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করেন।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ৬টি সংগঠনের জোট বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের আহ্বানে সর্বস্তরের শিক্ষক-কর্মচারী একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে যোগ দিয়েছেন। প্রচ- শীতেও শিক্ষক-কর্মচারীরা খোলা আকাশের নিচে রাত্রী যাপন করছেন।
গত পাঁচ দিনে আন্দোলনকারী অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীই ক্লান্ত। অবসন্ন শরীর-মন নিয়ে শুয়ে রয়েছেন প্রেস ক্লাবের সামনে। তবে দাবি আদায়ে তারা অনড়। অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষক নেতারা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ শুধু শিক্ষকদের জন্য নয়। ১৬ কোটি মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা। শিক্ষার মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করে উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ সময়ের দাবি।
শিক্ষক-কর্মচারীদের ছয়টি সংগঠনের জোট ' বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরাম' এর যুগ্ম মহাসচিব দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে প্রথম প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করে শিক্ষার ইতিহাস উজ্জ্বল করেছেন। ৭৩ দিন আন্দোলনের পর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন ৭৫ টাকা ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন ৫০ টাকা এবং রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার লক্ষ্যেই ২০১৩ সালে বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু আমাদের দাবি এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে। গত ৮ বছরে বেসরকারি শিক্ষক সমাজের কঠোর আন্দোলনেও দাবি পূরণ হয়নি। আমাদের জাতীয়করণ করা হোক। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী চাইলে সব সম্ভব। তিনি সুনজর দিলে, আশ্বাস দিলেই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবো। ফিরে যাবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজ শুররু করবো।
যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন শেখ বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বেসরকারি শিক্ষকরা ৯৭ শতাংশ দায়িত্ব পালন করেন। আর সরকারি শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করেন মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ আমরাই জাতীয়করণের বাইরে।
জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী আমরা শুধু বেতন পাচ্ছি। আর সরকারি শিক্ষকরা সকল ধরনের সুবিধা পাচ্ছেন। তারা বেতন স্কেল অনুযায়ী পূর্ণ বাড়ি ভাড়া পাচ্ছেন আর আমরা পাচ্ছি নির্ধারিত মাত্র এক হাজার টাকা। আমাদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট নেই। টাইম স্কেলও বন্ধ। চিকিৎসা ভাতা পাই মাত্র পাঁচশ টাকা। উৎসব ভাতা নেই। বোনাসও বেতনের মাত্র ২৫ শতাংশ। সব দিক দিয়ে আমরা পিছিয়ে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে শিক্ষকরা বিশেষ সুবিধা পান। আদালতে বসার চেয়ার পান, ভিআইপি সুবিধা পান, সরকারের নির্বাহী বিভাগের অনুমতি ছাড়া শিক্ষকদের হয়রানি বা গ্রেফতার করা যায় না। তবে বিপরীত চিত্র শুধু বাংলাদেশে। আশা করছি সরকার আমাদের ইজ্জত দিবেন।
আমরণ অনশন কর্মসূচিতে বিভিন্ন পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন জোটের আহ্বায়ক আব্দুল খালেক, উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুল হাসান সেলিম, জি এম শাওন, মতিউর রহমান দুলাল প্রমুখ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ