আসামে নাগরিক নিবন্ধনে বাংলাভাষীদের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় ধীরগতি
সংগ্রাম ডেস্ক : ভারতের আসামে প্রতীক্ষিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) তালিকার প্রথম খসড়ায় স্থান পেয়েছে ৫৭.৭৫ শতাংশ বাসিন্দা। ওই খসড়ার তথ্য বিশ্লেষণ করে বারাক উপত্যকতার বাংলা ভাষাভাষী বাসিন্দাদের যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ায় ধীরগতির প্রমাণ মিলেছে। এতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হিসেবে আসামের হিন্দু ও মুসলিম বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বাংলা ট্রিবিউন
তিনশুকিয়া, জোরহাট, দিবরুগড় জেলার বেশিরভাগ বাসিন্দা আসামী ভাষায় কথা বলেন। ওই তিন জেলার অধিকাংশ বাসিন্দাকে যাচাইবাছাই শেষে নিবন্ধন তালিকার প্রথম খসড়ায় স্থান দেওয়া হয়েছে। তিনশুকিয়ায় ৭৩ শতাংশ, জোরহাটে ৮৭ শতাংশ এবং দিবরুগড়ের ৭৩ শতাংশ মানুষ নিবন্ধনের খসড়া তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এর বিপরীতে বাংলা ভাষাভাষীদের আবাস বারাক উপত্যকতার বাসিন্দাদের জমা পড়া আবেদনের মধ্যে খসড়া তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে ৪৬.৩ শতাংশ বাসিন্দাকে।
কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জে নিবন্ধন চেয়ে করা ৪১ লাখ আবেদনের মধ্যে খসড়া তালিকায় স্থান পেয়েছে ১৯ লাখ বাসিন্দা। রাজ্যসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপ পাল ও তার ছেলে নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেও তার স্ত্রী ও কন্যা তালিকাভুক্ত হয়নি। বারাক উপত্যকতার শিলচর থেকে তিনি এনিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন। একই অবস্থা হয়েছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তাপোধীর ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রেও। তিনিও শিলচরের বাসিন্দা।
এনআরসি কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রথম ধাপে যারা অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন, খুব সহজেই তাদের যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা গেছে। বাদবাকী বাসিন্দাদের যাচাইবাছাইয়ে সময় বেশি লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। এনআরসি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম খসড়ায় স্থান না পাওয়া বাসিন্দাদের নিবন্ধনের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দেওয়া দলিলপত্র ও সনদগুলো খতিয়ে দেখা হবে।
প্রথম খসড়া তালিকার বিস্তারিত পাঠানোর পর আসছে ২০ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশনা জানাবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তালিকা প্রকাশের তারিখ সংক্রান্ত নির্দেশনাও সুপ্রিম কোর্ট থেকেই আসবে।
আসামের নাগরিক নিবন্ধন
বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব আগেই স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এই নিবন্ধন কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চের পর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা। এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে আসাম গণপরিষদ, অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন ও অন্য কিছু সংগঠন মনে করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হওয়ার পর আসামে যাওয়া মানুষদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। তবে নিরপেক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করবে।