শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ট্রাম্প আমলেই সবচেয়ে দুর্বল মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি’

সাবেক মার্কিন দূত নিকোলাস বার্ন

 

২৭ ডিসেম্বর, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট : সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্ন দাবি করেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যত প্রেসিডেন্ট এসেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি। ট্রাম্প মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও দুর্বল করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন বার্ন। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান, উভয় প্রশাসনেই কূটনৈতিকের দায়িত্ব পালন করে বার্ন দাবি করেন, ‘ট্রাম্প ওভাল অফিসে আসার পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তার মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে হোয়াইট হাউসে যত প্রেসিডেন্ট এসেছেন প্রত্যেকেই একটি মৌলিক নীতি অনুসরণ করেছিলেন কিন্তু ট্রাম্প পুরোপুরি তা থেকে সরে গিয়েছেন। ন্যাটো, বাণিজ্য , পরিবেশ , রাশিয়াসহ কূটনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে ট্রাম্প দুর্বলতা দেখিয়েছেন।’ জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনে এই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান হারিয়েছে।’

দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্সির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্প ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বৈশ্বিক দায়বদ্ধতা থেকে সরে গিয়েছেন। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন, যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছে বিশ্বের ২০০টি দেশ। তিনি ঐতিহাসিক ইরান পারমাণবিক চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং ন্যাটো দেশগুলোকে সম-পরিমাণ অর্থ নিশ্চিত করার জন্য হুমকি দিয়েছেন। ট্রাম্পের সবচেয়ে সাড়া জাগানো কূটনীতিক সিদ্ধান্ত হল জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। এতদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র জেরুজালেম সমস্যার ইতি টানতে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায়ই বিশ্বাস করত।

এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ‘তারা প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন।’

এছাড়া ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পরই ‘দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া ও পোল্যান্ড’ এ দায়িত্ব পালন করা সাবেক কূটনৈতিক এলিজাবেথ শ্যাকলফোর্ড পদত্যাগ করেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি দায়বদ্ধতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিজের পদত্যাগপত্রে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে এই সময়ে আমাদের কূটনীতিক পন্থার আরো বিস্তার ঘটাতে হবে, সংকুচিত নয়। আমি নিশ্চিত মার্কিন পররাষ্ট্রদপ্তর এই সংকট কাটিয়ে উঠবে। কিন্তু এটি আমাদের বৈশ্বিক নেতৃত্বে প্রভাব ফেলবে যা আমরা অনেক বছর ধরে অর্জন করেছি।’

অনেক কূটনীতিকই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের চলমান অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ডিপার্টমেন্টে খালি পদের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। টিলারসন নিজেও নিজের ৩০ ভাগ বাজেট কমানোর প্রস্তাব করেছেন। এই বছরেই দপ্তরে ৬০ ভাগ দূতের পদ শূন্য হয়েছে এবং ৭৪টি উচ্চপদ খালি আছে। মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতেও এই অঞ্চলের আটটি দেশেই যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের পদ শূন্য।

ডেমোক্রেট সদস্যরা টিলারসনের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে চিঠি লিখেছেন। বার্ন বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের মার্কিন পররাষ্ট্রদপ্তরের কার্যক্রম বৃদ্ধি না করলে এটি আরো দুর্বল ও বিচ্যুত হয়ে পড়বে।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ