শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

অন্যায় অসত্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

মোহাম্মদ ইয়ামিন খান : সমগ্র বিশ্বসহ আমাদের এই দেশে সামাজিক অপরাধ, অন্যায়, অশান্তি দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদিনের পত্রিকার পাতা খুললেই যে  নৃশংস হৃদয়বিদারী চিত্র চোখে ভেসে আসে, তা কোনো মানবসমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না। এ যেন নরকতূল্য আবাসভূমি, যে ভূমিতে অনুষ্ঠিত প্রতিটি অমানবিক ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে কথিত মানবসভ্যতাকে, মানুষের মিথ্যা অহঙ্কারকে, তার অস্তিত্বকে। মানুষের বিবেকহীন নির্লজ্জ আসুরিক কর্মকা- আজ পশুকেও হার মানিয়েছে। এমনকি নিষ্পাপ শিশুরাও এই মানুষরূপী শয়তানদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। একদিক দিয়ে মানুষ যেমন বিজ্ঞানের শিখরে উঠছে অন্য দিক দিয়ে ঠিক তেমনি ভাবে সে সবরকমের অন্যায়ের চুড়ান্তে গিয়ে পৌছেছে । মানুষের আত্মা আজ ত্রাহী সুরে চিৎকার করছে কেন? আজ পৃথিবীর চারিদিক দিয়ে আর্ত মানুষের হাহাকার উঠছে-শান্তি চাই, শান্তি চাই । দূর্বলের উপরে সবলের অত্যাচারে, দরিদ্রের উপর ধনীর বঞ্চনায়, শোষণে, শাসিতের উপর শাসকের অবিচারে, ন্যায়ের উপর অন্যায়ের বিজয়ে, সরলের উপর ধূর্তের বঞ্চনায় পৃথিবী আজ বাসের অযোগ্য হয়ে গেছে । নিরপরাধ ও শিশুর রক্তে আজ পৃথিবীর মাটি ভেজা । এই অবস্থা বিনাকারণে হয়নি। অন্য কেউ গ্রহ থেকে এসে এই অবস্থা সৃষ্টি করেনি । মানুষ নিজেই এই অবস্থার স্রষ্টা।  চলমান আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি তারই স্বাক্ষর বহন করে। সম্প্রতি কাকরাইলের একটি ৫ তলা বাসায় এবং বাড্ডায় মা-ছেলে এবং পিতা-মেয়ের জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। একটি খুনের ঘটনা সম্পত্তি নিয়ে আরেকটি হচ্ছে পরকীয়া নিয়ে। জোড়া খুন বা অন্য কোনো পৈশাচিক ঘটনায় অপরাধীরা ধরা পরুক না কেন মানুষের মধ্যে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, অবিশ্বাস, কূটিলতা, স্বার্থপরায়নতা, নৃশংসতা, পাশবিকতা ইত্যাদি যখন বৃদ্ধি পায় এককথায় মানুষের নৈতিক চরিত্রের অধঃপতন ঘটে তখন সে মনুষত্ব হারায়। কারণ মানবসমাজের প্রধান উপাদান হলো তার মনুষ্য ধর্ম তথা মানবতা, মনুষ্যত্ব। মানুষ যখন এটা হারিয়ে ফেলে তখন সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়। আর সমাজ ধ্বংস হয়ে গেলে মানুষের সুখ, শান্তি, নিরাপত্তা সবই ভূলুণ্ঠিত হয়। সমাজে এর বহিঃপ্রকাশ ঘটে বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের মধ্য দিয়ে। সত্য হলো মানুষ আজ তার ধর্ম মানবতা ও মনুষত্ব হারিয়ে সম্পূর্ণভাবে পশুতে পরিণত হয়েছে।  মানুষের চারিত্রিক অবনতি ও অবক্ষয় এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, পুলিশ পাহারা দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। আজ মানুষের শান্তির লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে, তাদেরকে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও অস্ত্র-শস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে । অন্যদিকে আইন কঠোর থেকে কঠোরতর করা হচ্ছে। যে অপরাধের সাজা ছিল ১০ বছর, তা বাড়িয়ে করা হয়েছে যাবজ্জীবন, যে অপরাধের সাজা ছিল যাবজ্জ্বীবন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। তারপরেও বাস্তবতা হলো, আইন-শৃঙখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়েও অপরাধপ্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। আজ আমরা আমাদের জীবনে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রত্যাখ্যান করে পাশ্চাত্য সভ্যতার সৃষ্ট নানা তন্ত্র-মন্ত্র মেনে নেওয়ার কারণেই এসব ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে । এই  সামাজিক অপরাধ দূরীকরণের একটিমাত্র পথ আছে আর তা হলো মুসলিমসহ সমস্ত মানবজাতিকে আল্লাহ্র তওহীদ তথা কালেমার পক্ষে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অসত্য ও মিথ্যার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ