ঢাকা, শনিবার 20 April 2024, ০৭ বৈশাখ ১৪৩০, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

পেঁয়াজের দাম লাগামছাড়া

অনলাইন ডেস্ক: পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে লাগামহীনভাবে।চলতি মাসের শুরুতে যে পেঁয়াজের কেজি ছিল পঞ্চাশ টাকা, এখন আড়তেই তা বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকা করে।

এ বছর দুই দফা বন্যার পর থেকে কয়েক মাস ধরে শাক-সবজির জন্য চড়া মূল্য গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের।  চালের দামও রয়েছে বাড়তি।

তার উপর পেঁয়াজের এই দাম বৃদ্ধিতে হতাশা প্রকাশ করে জহির উদ্দিন নামের এক ক্রেতা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, “চাল, শাক-সবজি, অন্যান্য তরকারির দাম অনেক আগেই নাগালের বাইরে চলে গেছে। এখন নতুন করে পেঁয়াজের দাম সীমা ছেড়ে গেছে। বিগত দিনে পেঁয়াজের দাম এতোটা বৃদ্ধি দেখিনি।”

জহিরের মতো কারওয়ানবাজার থেকে পেঁয়াজ না কিনে চলে আসেন নিউ ইস্কাটনের মুদি দোকানি মো. আলতাফ হোসেন।তিনি বলেন, “সকালে বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের দাম শুনে আর কিনলাম না। দেশি পেঁয়াজ মানভেদে এক পাল্লার (৫ কেজি) দাম চায় ৩৭০- ৪০০ টাকা, ওই পেঁয়াজ আনলে কেজি ৮০ টাকার বেশি বেচতে হবে। তাই আর আনি নাই।”  

এদিন কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, আড়ৎগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৬ টাকায়। আর মুদি দোকানে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৮০ টাকায়। এছাড়া মিশরীয় বড় আকারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

ঢাকার পড়ামহল্লার দোকানগুলোতেও পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের এই দাম বৃদ্ধির শুরু অগাস্টের প্রথম দিকে, সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে ২৫-২৮ টাকার পেঁয়াজ গিয়ে দাঁড়ায় ৫০ এর কোটায়।

পেঁয়াজের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ব্যাপক হৈ চৈয়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আমদানি বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর আর দাম না বাড়লেও এই কয়মাস ধরে ওই বাড়তি দামেই পেঁয়াজ কিনছিলেন মানুষ। এখন তা আরেক দফা বেড়ে গিয়ে ঠেকল কেজিপ্রতি ৮০ টাকায়।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে চলতি মাসে পেঁয়াজের দাম ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে ।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাহ নেওয়াজ বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই ৩ থেকে ৫ টাকা করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এক্ষেত্রে বিক্রেতাদের কিছুই করার থাকে না। আড়তে দাম বাড়লে সে অনুযায়ী খরচ বাদ দিয়ে এক টাকা লাভে বিক্রি করেন এই বাজারের ব্যবসায়ীরা।

এই পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দামে লাগাম টানতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন।

তিনি বলেন, “এখানে বড় ধরনের কারসাজি হচ্ছে। মওসুম তো প্রতি বছরই শেষ হয়, কিন্তু দাম তো এমন বাড়ে না। দেশে এই পণ্যটির ঘাটতিও নেই। তাহলে বুঝতে হবে সাপ্লাই চেইনে বড় কোনো চক্র রয়েছে যারা কাজটি করছে। সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতি অনেক সহনশীল। সেই কারণেই তারা সুযোগ নিচ্ছে।

“এ বিষয়ে সরকারের বক্তব্য দেওয়া প্রয়োজন।”

সারা দেশে পেঁয়াজের অন্যতম যোগানদাতা কুষ্টিয়া জেলায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

এই জেলার একজন কৃষক বলেন, মওসুমের শেষ পর্যায়ে এসে কৃষকের কাছে বিক্রি করার মতো পেঁয়াজ নেই। পেঁয়াজ চলে গেছে বড় বড় আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে। নতুন বীজতলা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ রয়েছে কৃষকের ঘরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্রপস উইংয়ের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল আজিজ ফরাজি বলেন, সাধারণত অক্টোবর মাসেই পেঁয়াজের বীজ বপণ শুরু হয়। জানুয়ারির শেষ কিংবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ