বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

যৌতুকের টাকা পরিশোধ না করায়

নওগাঁ সংবাদদাতা : নওগাঁর রাণীনগরে যৌতুকের অবশিষ্ট টাকা না দেওয়ার জন্য এক গৃহবধূকে স্বামী ও স্বামীর পরিবারের সদস্যদের বেদম মারপিট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালের শয্যায় ৭মাসের সন্তান নিয়ে অসহ্য যন্ত্রনায় দিন কাটছে গৃহবধূ শান্তি আক্তারের (২০)। ঘটনাটি ঘটেছে গত রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় পুলিশ শান্তি আক্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। গৃহবধূ শান্তি আক্তার ও তার পরিবার জানায়, প্রায় ৪বছর আগে উপজেলার কাশিমপুর ইউপির বাহাদুরপুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল গফুরের মেয়ে শান্তি আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার পারইল ইউপি’র তেবাড়িযা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে আরিফ হোসেনের সঙ্গে ৩৫ হাজার টাকা যৌতুকের বিনিময়ে বিয়ে হয়। শান্তির দিনমজুর বাবা যৌতুকের ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও বাকি টাকা পরিশোধের জন্য সময় নেন। বাকি টাকার জন্য বিয়ের দু’বছর পর থেকে আরিফ ও আরিফের পরিবারের সদস্যরা কারণে-অকারণে শান্তিকে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে শুরু করে। শুরু করে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন। ইতিপূর্বে শান্তিকে একাধিকবার বেদম মারপিট করার ঘটনাও ঘটেছে। এলাকার কতিপয় ব্যক্তিরা সেই বিষয়গুলো নিরসন করেন। প্রায় ৭মাস পূর্বে সিজারের মাধ্যমে শান্তির কোলে জন্ম নেয় এক ছেলে সন্তান। এই চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করছেন শান্তির দিনমজুর বাবা। গত রোববার রাতে যৌতুকের বাকি টাকার জন্য তার স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা বেদম মারপিট করে। এই মারপিটে শান্তির ৭মাসের সন্তানও আঘাত প্রাপ্ত হয়। এক পর্যায়ে শান্তি অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্বামী আরিফ শান্তির নানা নুরুর কাছে ফোন দিয়ে জানায় যে আপনারা এসে আপনার নাতির লাশ নিয়ে যান। ওই রাতেই পুলিশের সহযোগিতায় শান্তিকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় রাণীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।  বর্তমানে গৃহবধূ শান্তি আক্তার তার ৭মাসের সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালের শয্যায় অসহ্য যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত হাসপাতালে এসে গৃহবধূর যৌতুক লোভী স্বামী আরিফ কিংবা তার পরিবারের কেহ এসে তার কোন খোঁজ খবর নেয়নি। অপরদিকে শান্তির বাবা মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। শান্তির বাবা আব্দুল গফুর জানান, মেয়ের সুখের জন্য আমি এতোদিন কোন কিছু বলিনি। তারা আমার মেয়েকে কারণে-অকারণে মারপিট করতো। সকল কিছুর কষ্ট দিতো। মেয়ে সন্তান প্রসবের কারণে আমি যৌতুকের বাকি টাকা দিতে পারিনি। এরমধ্যে তারা আমার মেয়ের সিজারের ঘা শুকানোর আগেই আবার মারপিট করলো। আমি এর উপযুক্ত শাস্তি চাই। আমার মেয়ে একটু সুস্থ হলেই থানায় লিখিত অভিযোগ প্রদান করবো। আরিফের পার্শ্ববর্তি রাজমিস্ত্রি সাহাজান জানান, মারপিটের ঘটনা সত্য। এর আগেও আরিফ কারণে-অকারণে শান্তিকে মারপিট করতো। শান্তি একজন নিরীহ গৃহবধূ। শান্তির স্বামী আরিফ জানান, বড় ধরনের কোন বিষয় নয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে একটু হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আরিফের বাবা নুর ইসলাম জানান, আমি ওইদিন বাড়িতে ছিলাম না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ