শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খুলনায় এক মাসের ব্যবধানে সিলিন্ডার প্রতি গ্যাসের দাম ১৭০ টাকা বৃদ্ধি

খুলনা অফিস : গৃহিণীদের নিত্য রান্নার কাজে প্রয়োজনীয় জিনিস গ্যাসের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। মাত্র ২৫/৩০ দিনের ব্যবধানে সিলিন্ডার প্রতি দাম বেড়েছে ১৭০ টাকা। পরিবেশক ও কোম্পানির কতিপয় কর্মকর্তার কারসাজিতে এ দাম বেড়েছে বলে এতে খুচরা ভোক্তা সাধারণ ও খুচরা বিক্রেতারা সাফারার হচ্ছে।
খালিশপুরের খুচরা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা মেসার্স সুমন ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর আবু হানিফ বলেন, প্রতিটি গ্যাসের দামই বেড়েছে। গড়ে গ্যাসের দাম ১৭০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবারে আরো ৭০ টাকা বাড়ানো হয়। ১৫/২০ দিনের ব্যবধানে গ্যাসের দাম বেড়েছে। পরিবেশকদের কারসাজিতে এ দাম বেড়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন।
সুন্দরবন গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ডিলার এস এস ট্রেডার্সের পরিচালক শেখ আবুল কাশেম বলেন, এক মাসের ব্যবধানে প্রতিটি কোম্পানির গ্যাসের দাম একশ’ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে ভোক্তার পাশাপাশি তারাও বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। গত মঙ্গলবারে বসুন্ধরা গ্যাস কোম্পানি সিলিন্ডার প্রতি ৫০ টাকা বৃদ্ধি করেছে। বসুন্ধরা কোম্পানির আগে প্রতি সিলিন্ডারের দাম ছিল ৯০০ থেকে ৯২০ টাকা। এখন তা ৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ওমেরা, বিএম, যমুনা কোম্পানি ৮০ টাকা করে দাম বাড়িয়েছে। পিবিসি ছাড়া সকল বেসরকারি গ্যাস কোম্পানির গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, কারসাজি করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ওমেরা গ্যাস কোম্পানি খুলনার এমডিও মাহতাব আহমেদ বলেন, গত তিন মাসে তিন দফা তাদের কোম্পানির গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রথম দফায় ৭৬ টাকা, দ্বিতীয় দফায় ৪৫ টাকা ও সর্বশেষ ৭০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ দাম বাড়িয়ে এখন দাম দাঁড়িয়েছে জিও রেট ১০৩০ টাকা। কারসাজির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, সব কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। ঢাকায় সমিতির বৈঠক করে এ দাম বাড়ায়। এখানে স্থানীয় চাকরিজীবী বা পরিবেশকদের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোন হাত নেই বলে তিনি দাবি করেন। যারা এ তথ্য দিয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল বলেছে বলে তিনি জানান।
বসুন্ধরা কোম্পানির খুলনার এক প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সব কোম্পানি গ্যাসের দাম বাড়ালেও তারা বাড়ায়নি। সর্বশেষ তারা সিলিন্ডার প্রতি ৫০ টাকা বাড়িয়েছেন। এখন ওই কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ৯শ’ টাকা করা হয়েছে। কারসাজির ব্যাপারে অন্য কোম্পানির হাত থাকতে পারে কিন্তু বসুন্ধরা কোম্পানির নেই বলে তিনি দাবি করেন।
মাসুম ব্রাদার্সের মালিক গ্যাসের পরিবেশক আমিনুল হক পারভেজ বলেন, যারা এসব অভিযোগ করছেন তারা গ্যাস ব্যবসা করে কি না তা সন্দেহ হয়। কারণ তিনি গভীর রাত পর্যন্ত গ্যাস সিলিন্ডার ট্রাক থেকে বুঝে নেয়ার জন্য শ্রম দেন। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম ও ডলারের মান বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রভাব পড়েছে গ্যাসে। এজন্য দাম বেড়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, খুলনায় ১ লাখ গ্যাস সিলিন্ডারের চাহিদা রয়েছে। পরিবেশক ও কোম্পানির কর্মকর্তারা কেউ কারোর কথা শোনে না। যে যার পলিসি অনুযায়ী গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বাড়াচ্ছে। এখানে পরিবেশকদের কোন হাত নেই বলে তিনি জানান।
খুলনা এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মো. তোবারেক হোসেন তপু বলেন, গত দেড় মাসের ব্যবধানে সিলিন্ডার প্রতি আড়াইশ’ টাকা দাম বেড়েছে। সর্বশেষ ৮০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। একটা বিশেষ মহল সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পরিকল্পিতভাবে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করছে। এ মহলটি হলো খুলনার গ্যাস পরিবেশক ও বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারা। এরা পরস্পর যোগসাজসে অতি মুনাফা আদায়ের লক্ষ্যে এভাবে কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ করেন সমিতির জয়েন্ট সেক্রেটারি আব্দুল ওয়াদুদ। তিনিসহ আরো অনেকে বলেন, এতে করে খুচরা গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সাথে ভোক্তারা সাফারার হচ্ছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ