শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

অন্যায় অসত্যের সাথে আপস না করার শপথ নিতে হবে

চট্টগ্রাম অফিস: চট্টগ্রামে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে পবিত্র আশুরা পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। এর মধ্যে ছিল  দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা। শিয়া সম্প্রদায় এ উপলক্ষে চট্টগ্রামে তাজিয়া মিছিল করেছে।
এদিকে বায়তুশ্ র্শফ আনজুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ কর্তৃক পবিত্র আশুরা উদ্যাপন উপলক্ষে পবিত্র শাহাদাতে কারবালা মাহফিল ১০ই মুহররম ১লা অক্টোবর রোববার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় বায়তুশ্ র্শফ জামে মসজিদে বিকাল ৩টায় বায়তুশ্ শরফের পীর শাহ্সূফী হযরত মাওলানা মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন (মঃজিঃআ) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে আলোচক ছিলেন- মাওলানা মীম ছিদ্দিক আহমদ ফারুকী, মাওলানা কাজী নাছির উদ্দিন, মাওলানা নুরুল ইসলাম, মজলিসুল উলামা বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মামুনুর রশীদ নুরী, মাওলানা কাজী জাফর আহমদ, মাওলানা নুরুল আলম ফারুকী, মাওলানা শফিক আহমদ নাঈমী, মাওলানা নুরুল হুদা আল কাদেরী, মাওলানা সালাহ উদ্দিন বেলাল, মাওলানা আবদুশ শাকুর, মাওলানা মোঃ সা’দ, মাওলানা ফাইজুল কবির বদরী, মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন- বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল করীম, মাসিক দ্বীন দুনিয়ার সম্পাদক মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ, মাওলানা ওবাইদুল্লাহ প্রমুখ।
মাহফিল পরিচালনা করেন- মাওলানা কাজী শিহাব উদ্দিন ও মাওলানা মুহাম্মদ মুছা। মাহফিলে আলোচকরা বলেন- পবিত্র আশুরা পালন আরম্ভ হয়েছে ২য় হিজরীর মহরম মাস হতে। আর শাহাদাতে কারবালা সংঘটিত হয়েছে ৬১ হিজরীর মুহররম মাসে। ৬১ হিজরীতে এসে আশুরা ও শাহাদাতে কারবালা এক মোহনায় মিলিত হয়েছে। বিগত ১৪শত বছর যাবৎ আশুরার রোজা এবং রাতে ইবাদাত এবং শাহাদাতে কারবালার স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কারণ কারবালা হৃদয়বিদারক ও লোমহর্ষক আত্মত্যাগের মধ্যে রয়েছে অনুস্মরণীয় আদর্শ ও শিক্ষা। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের ক্রান্তিকালে অনেক করণীয় ও বর্জনীয় নির্দেশনা এ আশুরায় বিদ্যমান। এদিনটি আমাদের মাঝে প্রতি বছর আগমন করে। তাই, এই দিনের আবেদন চির অম্লান।
দুর্বল, অসহায় ও নির্যাতিত মানবতার সহায় আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের কালজয়ী আদর্শ। শক্তি ও ক্ষমতার জোরে যারা নেশাগ্রস্ত তাদের বিরুদ্ধে অসহায় দুর্বল মানবতার অপ্রতিরুদ্ধ প্রতিবাদের দিন আশুরা। অন্যায় ও অসত্যের পূজারী পাপিষ্ঠ ইয়াজীদের বিরুদ্ধে ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র প্রতিবাদ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করলে আজো ঈমানী চেতনায় জোয়ার আসে। তাই আমরা ঈমানদার মুসলমান হিসেবে আশুরায় ইবাদাতও করব, সাথে সাথে শাহাদাতে কারবালার স্মৃতিচারণ করে আউলাদে রাসূলের প্রতি ভক্তি, মুহাব্বতের অনুপ্রেরণাও অর্জন করব। ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘এজিদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন ইসলামী আদর্শ রক্ষার্থে। শাহাদাত বরণের মাধ্যমে তিনি সত্যকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাই আমরা আজ শপথ করব অন্যায় ও অসত্যের সাথে কখনো আপস করব না। আর এইটাই হল প্রকৃত কারবালার শিক্ষা। আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় হযরত কেবলা (রহঃ) ও মরহুম হুজুর কেবলা (রহঃ) এদের নীতিও এই রকম ছিল। শেষে   দেশের উন্নতি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এদিকে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্বীর্য পরিবেশে শেরশাহ সাংবাদিক হাউজিং এলাকায় পালন করা হয়েছে পবিত্র আশুরা। আশুরা উপলক্ষে সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি জামে মসজিদে পবিত্র আশুরার বিষয়বস্তু তুলে ধরে অনুষ্ঠিত  হয় ওয়াজ মাহফিল। পরে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
১ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় নগরীর বহদ্দারহাট জামে মসজিদে তিনদিনব্যাপী আহলে বায়তে রাসুল (স.) স্মরণে শোহাদায়ে কারবালা মাহফিলে সমাপনী দিনে বক্তারা বলেছেন, ইমাম হোসাইন (রাঃ) ও কারবালার ইতিহাস বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহবান জানিয়ে বিজ্ঞ বক্তারা বলেছেন, বিশ্ব ইতিহাসে কারবালা একটি লোমহর্ষক হৃদয়বিদারক ঘটনা। কারবালার প্রান্তে ফোরাত নদীর তীরে যেদিন নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন ইমাম হোসাইন (রা.)। সেদিন থেকে ইসলামী আদর্শ প্রকৃত প্রাণশক্তি অর্জন করেছে।
“শোহাদায়ে কারবালা থেকে আমাদের প্রচুর শিক্ষা নেওয়ার আছে। আমরা ইসলামের কথা বলি, প্রকৃতপক্ষে ইসলামের কী খেদমত আমরা করতে পেরেছি। আজ মুসলমানদের উপর জলুম নেমে আসছে সারা বিশ^ বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানদের আল্লাহ্ হেফাজত করুক। সাথে সাথে আমরা প্রকৃত মুসলমান হব, আদর্শবান হব, সমাজ ও রাষ্ট্রে গ্রহণ যোগ্য ব্যক্তি হব, সে চেষ্টায় হউক শোহাদায়ে কারবালার আদর্শ্য” গতকাল (৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুর জামে মসজিদে মুরাদপুর মহল্লা ও মসজিদ কমিটির আয়োজনে, আশেকানে পাক পঞ্জতন বাংলাদেশ ও গাউছিয়া কমিটি মুরাদপুর কমিটির সার্বিক সহযোগিতায় ৩দিনব্যাপী হিজরী নববর্ষ উদযাপন ও আহলে বাইতে (দ:) স্মরণে শোহাদায়ে কারবালা মাহফিলের শেষ দিন সন্ধ্যায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ