শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নীলফামারীতে গৃহকর্তা অতুল চন্দ্র হত্যা রহস্য উন্মোচিত

নীলফামারী সংবাদদাতা: নীলফামারীর ডোমারে গৃহকর্তা অতুল চন্দ্র রায় হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ নিহত অতুলের মেয়ের ছেলে সহ ৩ কিশোরকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন, নয়ানী বাকডোকরা গ্রামের নিহত অতুল চন্দ্রের জামাতা প্রেমানন্দ রায়ের ছেলে সুমন চন্দ্র রায়, সকাল চন্দ্র রায়ের ছেলে প্রকাশ চন্দ্র রায় ও কাউয়াতলী গ্রামের রফিকুল ইসলাম কবিরাজের ছেলে নিশান। তারা তিনজনই সমবয়সী এবং ডোমার বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র। পুলিশ জানায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে তাদেরকে নিজ নিজ বাড়ী থেকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া ২৫ হাজার ৫ শ টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। আটকৃতদের গতকাল মঙ্গলবার বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা খুনের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। পুলিশ জানায়, সুমনের নানা অতুল চন্দ্র রায়ের কাছে টাকা ছিল সেটি জানতো তাঁর নাতি। ওই টাকা নেয়ার জন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে সুমন। গত ৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে সুমনের মামীকে আনতে ডালিয়ায় যায় তার নানী। ওই তিন বন্ধু পরামর্শ অনুযায়ী অতুলের একা বাড়িতে থাকার সুযোগে সুমন তার দুই বন্ধুকে অতুলের ঘরে রক্ষিত টাকা আনতে বাড়িতে ঢুকিয়ে দেয়। তারা ঘরে রাখা ৩২ হাজার টাকা নিয়ে আসার সময় অতুল টের পেলে দুই বন্ধু মিলে অতুলের পিছন দিকে হাত বেধে নাকে মুখে টেপ আটকিয়ে দিয়ে সটকে পরে। এ অবস্থায় অতুল চন্দ্র শ্বাসরোধে মারা যান। পরে সুমন বাড়িতে ঢুকে দেখে তার নানা অতুল মারা গেছেন। খুনীরা জানায়, অতুলের কাছে টাকা আছে বিষয়টি তার নাতী সুমন জানত। সে তার নানার টাকা চুরি করার জন্য নানা ফন্দি আটে এবং অপর বন্ধুরা মিলে এক পর্যায়ে সে টাকা লুট করে। এ সময় নানা অতুল দেখে ফেলায় তারা এ হত্যাকান্ডটি ঘটায়। উল্লেখ্য যে, গত ৭ সেপ্টেম্বর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাকডোকরা গ্রামে গৃহকর্তা অতুল চন্দ্র রায় (৬৫) কে শ^াসরোধে হত্যা করে নগদ অর্থসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় বাড়িতে অতুল চন্দ্র একাই ছিল। নিহত অতুল চন্দ্রের ছেলে বিপুল চন্দ্র রায় দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকার কারনে অতুল চন্দ্র, স্ত্রী দেবমায়া রানী ও পুত্রবধু ববিতা রানীকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। ঘটনার কয়েক দিন আগে অতুলের পুত্রবধু ববিতা রানী তার বাবার বাড়ীতে বেড়াতে যান। ওইদিন অতুলের স্ত্রী দেবমায়া রানী তার পুত্রবধুকে আনতে পাশর্^বর্তী ডিমলা উপজেলার ডালিয়া গ্রামে যায়। এই সুযোগে খুনীরা বাড়িতে প্রবেশ করে অতুলের হাত, পাঁ বেধে মুখে টেপ পেঁচিয়ে বারান্দায় ফেলে রেখে নগদ অর্থসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার পরে অতুল চন্দ্র রায়ের নাতী সুমন চন্দ্র রায় এলাকাবাসীর সহায়তায় অতুল চন্দ্র রায়কে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অতুল চন্দ্র রায় ওই গ্রামের বিষ্ট রাম মোহনের ছেলে। এ ঘটনায় অতুলের স্ত্রী দেবমায়া বাদী হয়ে ডোমার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ডোমার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল জানান, আটককৃতদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ