শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

উত্তর কোরিয়ায় বিরুদ্ধে সামরিক বিকল্পের ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের

১৯ সেপ্টেম্বর, রয়টার্স : কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার বাইরে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক বিকল্পের কথাও ভাবা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস। গত সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই ইঙ্গিত দেন । যদিও কী ধরনের বিকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মারণাস্ত্র ব্যবহার করবে কি না সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এমন বিকল্পের চিন্তাভাবনা করছে যার প্রত্যুত্তরে দক্ষিণ কোরিয়া পিয়ংইয়ংয়ের নির্মম পাল্টা আক্রমণের শিকার হবে না বলেও ইঙ্গিত ম্যাটিসের। এর আগে রোববার জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালিও বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার একের পর এক পারমাণবিক কর্মসূচিতে নিরাপত্তা পরিষদ বিকল্প পদক্ষেপের ঘাটতিতে পড়েছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিষয়টি পেন্টাগনের হাতে ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কোরীয় উপদ্বীপে যে কোনো সংঘাত সেখানে রক্তপাতের মাত্রা বাড়িযে দেবে, যা ১৯৫০-৫৩ পর্যন্ত চলা কোরিয়ান যুদ্ধের পর আর দেখা যায়নি।
শান্তি চুক্তি নয়, যুদ্ধবিরতিতে শেষ হওয়া ওই যুদ্ধে ৫০ হাজারের বেশি মার্কিনি এবং অন্তত ১০ লাখ কোরিয়ান প্রাণ হারান। উত্তর কোরিয়ার কামানের সীমার মধ্যেই আছে সিউল; প্রচলিত ও পারমাণবিক অস্ত্রের পাশাপাশি পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্রাগারে রাসায়নিক এবং জৈবিক অস্ত্রের সংখ্যাও প্রচুর বলে ধারণা করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়াকে ভয়াবহ বিপদে ফেলবে না এমন সামরিক বিকল্প আছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাটিস বলেন, “আছে, তবে এ নিয়ে বিস্তারিত বলবো না আমি।”বিকল্পের মধ্যে প্রাণঘাতী বাহিনী ব্যবহারের চিন্তা করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নে সাংবাদিকরা চেপে ধরলেও ম্যাটিসের সোজা উত্তর, “আমি এ নিয়ে বলতে চাই না।”রয়টার্স বলছে, উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী নয় এমন যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার ট্রাম্পের আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নৌ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যা বিদ্যমান অবরোধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়া, অথবা উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার হামলার নির্দেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র ও সৈন্যসংখ্যা বাড়ানো। দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন ২৮,৫০০ মার্কিন সেনা আছে। দক্ষিণ কোরিয়াও উপদ্বীপজুড়ে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র পুনর্বহাল করতে চাইছে বলে স্বীকার করেন ম্যাটিস। এই বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার কথা জানালেও বিকল্প সামরিক পদক্ষেপের মধ্যে এটি বিবেচনা করা হচ্ছে কি না তা নিয়ে মন্তব্য করেননি সাবেক এই জেনারেল। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বি-ওয়ান বি বোমারু বিমান ও এফ-৩৫ জঙ্গি বিমান নিয়ে বোমা ফেলার মহড়া দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চললেও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর অবস্থান দেখে সহসাই সংঘাত বাধার কোনো সম্ভাবনা আছে বলে মনে হচ্ছে না। এর আগে ট্রাম্প পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে মারণাস্ত্র ব্যবহারের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, এর ফলে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটতে পারে। বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ‘আগুন ও উন্মত্ততা’ বাগধারা ব্যবহার করেছিলেন, যাতে পারমাণবিক যুদ্ধের চিত্রের কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয় বলে ধারণা রয়টার্সের। উত্তর কোরিয়াকে সামলাতে চীনকে ‘আরও বেশি কিছু’ করার অনুরোধও বারব্লার জানিয়ে আসছেন ট্রাম্প। কূটনীতি এবং অবরোধ কার্যক্রমের মাধ্যমে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর চাপ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সফলতা আসছে বলেও সাংবাদিকদের জানান ম্যাটিস। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর প্রতি সরাসরি হুমকি না হলে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ