শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বার্মিজ আর্মি-চরমপন্থী বৌদ্ধ ডেথস্কোয়াডের কারণে রাখাইন নরকে পরিণত

১৮ সেপ্টেম্বর, ইন্ডিয়ানা ডেইলি স্টুডেন্ট ডটকম : মিয়ানমারের সংখালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায় আবারো অবর্ণনীয় ব্যাপক সহিংসতার মোকাবেলা করছে। তাদের ওপর চালানো হচ্ছে পাশবিক নির্যাতন আর বীভৎস হত্যাযজ্ঞ। দেশটি মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আরো একটি গণহত্যার শিকার। বার্মার সামরিক বাহিনীর সহায়তায় চরমপন্থী বৌদ্ধদের ডেথস্কোয়াড মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে নরকে পরিণত করেছে। গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়া সহিংসতায় ৪ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী পালিয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই অত্যাচারের ধরন বিস্ময়কর এবং এই বিষয়ে মিডিয়ার উদাসীনতা এবং আপেক্ষিক নীরবতা সত্যিকার অর্থেই ঘৃণ্য। পশ্চিমা মিডিয়া দীর্ঘ-দিন ধরে মুসলিম বিরোধী পক্ষপাত ধারণ করে আছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার জাইদ রা’দ আল-হুসেন এই বীভৎস হত্যাযজ্ঞকে ‘পাঠ্যপুস্তকের জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছেন। তার এই বাণী প্রচারে পশ্চিমা মিডিয়ার ব্যর্থতা এই মুসলিম বিরোধী অভিযোগকে আরো একবার প্রমাণ করেছে।২০০০ সালের গোড়ার দিকে দারফুরের গণহত্যা এবং আইএসের ইয়াজিদি জাতিগত নিধনের সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে আরেকটি দানবীয় হত্যাযজ্ঞ। একুশ শতকের অন্যতম একটি প্রধান গণহত্যা হিসেবে মনে হচ্ছে এবার রোহিঙ্গা নিধনের স্থায়ী প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। ঔপনিবেশিক পরবর্তী বার্মার ইতিহাসে রোহিঙ্গারা ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে আসছে ও ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীর বিশাল স্রোত বাংলাদেশে আঘাত হানে। ১৯৬২ সালে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তা শাসক ক্ষমতায় পর ১৯৮০’র দশকে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর জাতিগত নিপীড়ন শুরু হয়। ২০১১ সালে নির্বাচনের পর দেশটিতে গণতন্ত্র ফিরে আসে। একসময়কার রাজনৈতিক বন্ধি অং সান সু চি ১৯৯১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। বার্মার সামরিক বাহিনীর চলমান ‘জাতিগত নিধন’ অভিযানে সু চি এখন উড্রো উইলসন, হেনরি কিসিঞ্জার, জিমি কার্টার এবং বারাক ওবামার মতো শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের দিকে নজর রাখছেন। মিয়ানমারের সরকার দ্বারা পরিচালিত গণহত্যার নিন্দা করে জাতিসংঘের প্রস্তাবকে সমর্থন এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বানে সারা দেয়া যেকোনো নৈতিকবোধ সম্পন্ন জাতির অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব। বার্মিজ সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ রেখেছে এবং মিয়ানমারে বিপুল পরিমান অস্ত্র আমদানির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচারণা বিশ্বের বিভিন্ন সরকারকে দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি করতে নিরুৎসাহিত করবে। মিয়ানমার তার বেশিরভাগ অস্ত্র আমদানি করে চীন, রাশিয়া, ইউক্রেন, ইসরাইল ও ভারত থেকে। যদিও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জাতিগত নিধনে ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্র মিত্র সমর্থন অব্যাহত রয়েছে। চীনও এই সহিংস কর্মকাণ্ডে মিয়ানমারকে সমর্থন করছে। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একটি শব্দ প্রচার করেনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ