রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের ২.৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি স্বাক্ষর
১৩ সেপ্টেম্বর, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, বিবিসি : রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র অস্ত্র ক্রয় করছে ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক সদস্য দেশ তুরস্ক। এই ‘এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র’ ২৪৮ মাইল পথ পাড়ি দিতে সক্ষম এবং একই সঙ্গে ৮০টি লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে পারে। গত ছয় মাস ধরে পূর্ব ইউরোপে নিজেদের সামরিক বাহিনীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে রাশিয়া এবং তুরস্ক কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা টানাপোড়নের মাঝে এই খবর আসে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তৈয়ব এরদোগান বলেন, ‘ইউরোপের অস্ত্রের দাম বেশি হওয়ায় তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয় করবে।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির সঙ্গে তুরস্কের মতবিরোধ সৃষ্টি হওয়ার পর দেশটি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। জার্মানি ইতিমধ্যে তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রি করবে না বলে ঘোষণা করেছে।
এরদোগান তুর্কি সংবাদমাধ্যম হুরিয়াতকে বলেন, ‘কুর্দি সন্ত্রাসীদের দমন করার জন্য পশ্চিমা সহযোগিদের কাছ থেকে যে অস্ত্র ক্রয় করা হয়েছিল সেটি অনেক ব্যয়সাপেক্ষ।’ এছাড়া আমরা কোন দেশের সঙ্গে চুক্তি করব সেটি আমাদের স্বাধীনতা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সামরিক উপদেষ্টা কোজিন বলেন, ‘এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি আমাদের কৌশলগত স্বার্থের জন্য উপযোগী।’
এস-৪০০ কেনায় ক্ষুব্ধ আমেরিক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনার চুক্তি করায় ক্ষুব্ধ হয়েছে আমেরিকা। তিনি বলেন, আমেরিকার জন্য তুরস্কের অপেক্ষা করতে হবে কি? বরং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই নেবে আঙ্কারা। এর আগে তুরস্ককে ড্রোন সরবরাহ করতে আমেরিকার অস্বীকৃতির কথাও তুলে ধরেন তিনি। পরে তুরস্ক নিজেই ড্রোন নির্মাণ শুরু করায় আমেরিকার নাখোশ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার জন্য প্রথম কিস্তির অর্থ রাশিয়াকে দেয়া হয়েছে বলে গতকাল এরদোগান ঘোষণা করেছেন। এদিকে, এটি কেনার বিষয়ে আঙ্কারার কাছে পেন্টাগন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলেও রুশ সংবাদ সংস্থা স্পুতনিককে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্বেগের কারণ ব্যাখ্যা করতে যেয়ে পেন্টাগন বলেছে, ন্যাটো সদস্য হিসেবে মিত্রদেশগুলোতে ব্যবহার যোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তুরস্কের ব্যবহার করা উচিত।
রাশিয়ার তৈরি পরবর্তী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ দিয়ে বহু দূরপাল্লার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা যাবে। ড্রোন থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পর্যন্ত নানা ধরণের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসের উপযোগী করে একে তৈরি করা হয়েছে।