শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নীলফামারীতে পানির দামে চামড়া বিক্রি মওসুমী ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

নীলফামারী সংবাদদাতা : নীলফামারীতে পানির দামে কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন  মওসুমী পাইকার সহ চামড়া ব্যবসায়ীরা। চামড়া ব্যবসায়ীদের দাবি, জেলা শহরের বড় বাজারে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বড় সাইজের চামড়া। আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখাযায়, চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাহাকার। মৌসুমী পাইকারেরা জানান, গ্রাম ঘুরে গরুর চামড়া কিনে তা এখন পানির দামে বিক্রি করতে হয়েছে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। মৌসুমী পাইকারদের কেনা চামড়া মধ্যম শ্রেণীর পাইকাররা এর দরদাম করছে ক্রয়মূল্যের অর্ধেকের একটু বেশী। চামড়া ভাল রাখার একমাত্র উপকরণ হলো লবণ। সেই লবণও দোকান থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। লবণের বাজার সম্পর্কে মুদি দোকানদারগণ জানান, আড়ৎদার তাদের কাছ থেকে লবণের চড়াদাম নিয়েছেন। আড়ত থেকে এক বস্তা লবণ আনতে খরচ পড়ে ১৩৫০ টাকা। এ ছাড়া লবণ গলে গিয়ে ৭০ কেজি ওজনের বস্তা কমে ৬৫ কেজি হয়। তাই ব্যবসা ঠিক রাখতে লবণের দাম বেশী নিতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এমনি বিভিন্ন সমস্যার কারণে চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
এতে বেশী মূল্যে চামড়া কিনে হাজার হাজার টাকা লোকসানে পড়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তবে চামড়া বাজারের বড় ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কমে যাওয়ার পাশাপাশি চামড়া সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রধান উপকরণ লবণেরও দাম বেমী এবং ট্যানারির মালিকরা চামড়া কেনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এটাও বাজারে চামড়ার দাম কমার কারণ হতে পারে। কুরবানিতে চামড়ার ব্যবসা সম্পর্কে নীলফামারী চেম্বারের সাবেক সভাপতি সফিকুল আলম ডাবলু বলেন, এই চামড়া মৌসুমী ব্যবসায়ীসহ চারবার হাতবদল হয়।
প্রথমে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গ্রাম ঘুরে চামড়া কিনে নেন। দ্বিতীয় ধাপে পাইকার বা মধ্যস্থতাকারীরা নগদ টাকা দিয়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের থেকে চামড়া কেনেন। তৃতীয় ধাপে আড়ৎদাররা পাইকারদের কাছ থেকে চামড়া কেনার পর লাভের আশায় ঘরে কিছু দিনের জন্য তা ফেলে রাখেন। শেষ ধাপে আড়ৎদারদের কাছ থেকে চামড়াগুলো কিনে নেন ট্যানারি মালিকরা। তবে চার ধাপের এই কেনাবেচায় কখনও লোকসান হয় না আড়ৎদার কিংবা ট্যানারির মালিকের। কিন্তু ক্ষতি হয় মৌসুমী ও পাইকার ব্যবসায়ীদের। ট্যানারির মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলেও দাবী করেন সাবেক এ ব্যবসায়ী নেতা। এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন, এবার অনেক ট্যানারি বন্ধ থাকায় স্বল্পমূল্যে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। তাছাড়া মধ্যম শ্রেণির পাইকারী ব্যবসায়ীরা এবার ব্যাংক থেকে কোনও লোন না পাওয়ায় তারাও বেশী চামড়া কিনতে পারছেন না, দাম কমে যাওয়ার এটাও একটা কারণ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ