শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খুলনায় ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের অপকর্মে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ

খুলনা অফিস : খুলনার ফুলতলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. এনামুল মহলদারের মাদক ব্যবসা, লুটপাট, মুক্তিপণ, ছিনতাই ও অস্ত্রের মুখে চাঁদাবাজিতে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তার বিরুদ্ধে থানায় দায়েরকৃত পাঁচটি মামলার একটিতে আদালত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে থাকলেও পুলিশের খাতায় অজ্ঞাত কারণে সে পলাতক ও ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে। ফুলতলার শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসীর কাছে এনামুল মহলদার এক মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। তার চাঁদাবাজির শিকার গাড়াখোলা গ্রামের গোলাম মোস্তফা মোল্যার ছেলে মো. জনি মোল্যা সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তৃতায় তিনি বলেন, গাড়াখোলা গ্রামের হাসান মহলদারের ছেলে মো. এনামুল মহলদার ও ছায়ের বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল্লাহ বিশ্বাস তাদের ৫/৬ জনের স্বশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী নিয়ে অস্ত্রের মুখে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দস্যুতা ও মাদক ব্যবসায় জড়িত। গত ১৮ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাড়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে এনামুল মহলদার গং অতর্কিতভাবে জনি মোল্যার উপর হামলা ও কালো রং এর পিস্তল তার মুখের ভিতর ঢুকিয়ে জীবননাশের হুমকী দিয়ে ৪০হাজার টাকা ও ১৬ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা (নং-১৫) হলেও পুলিশ তাকে আটক করেনি। ২৬ জুন দিবাগত রাতে এনামুল মহলদার ও আব্দুল্লাহ বিশ্বাস গং একই গ্রামের কুদ্দুস গাজীর ছেলে মো. বাপ্পী গাজী (২৪) কে মুচিপাড়া রেল লাইনের পাশে বট গাছের নিচে মুক্তিপনের দাবিতে আটকে রাখে। পরে এনামুল মহলদারের কাছে নগদ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ কথা প্রকাশ করলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকী দেয়া হয়। অপহৃত বাপ্পী কাজীর মা মোছা. ফাতেমা বেগম বাদি হয়ে মামলা (নং-১, তারিখ-৪/০৮/২০১৭ইং) দায়ের করেন। তবে এ ক্ষেত্রেও পুলিশ নিরব। একই গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বর মোছা. রাশেদা বেগমের মেয়ে মোছা. সাদিয়া খাতুন রহিমার দায়েরকৃত অভিযোগে জানা যায়, ২৪ জুলাই রাত ৯টার দিকে তার গাড়াখোলা গ্রামস্থ বাড়িতে এনামুল মহলদার ও আব্দুল্লাহ বিশ্বাসসহ স্বশস্ত্র ৪/৫ দূর্বৃত্ত প্রবেশ করে। তার ৬ বছর বয়সের শিশু ছেলের বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে পরিবারের সকলকে জিম্মি করে নগদ ৫৫হাজার টাকা, স্বর্ণের দু’টি চেইন, একটি আংটি ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তার স্বামী সানোয়ার হোসেনকেও বেধড়ক মারপিট করে। থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে সেটি এজাহার হিসেবে গন্য করা হয়নি। এনামুল মহলদার গং দীর্ঘদিন ধরে বিল ডাকাতিয়ার ঘেরের পাড়ে ও নার্সারী বাগানে অবস্থান করে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও হেরোইনের ব্যবস্থা পরিচালনা করছে। তবে তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না বলে সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। এ সময় তাদের নির্যাতনের শিকার সাদিয়া খাতুন রহিমা ও ফাতেমা বেগম ও শাহীন মোড়ল  উপস্থিত ছিলেন। তারা অবিলম্বে এ সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। উল্লেখ্য, খুলনার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়ার ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত জিআর ৬৩/২০০৯ মামলায় এনামুল মহলদারকে ৬মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, এনামুল মহলদার বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ