খালে পুনরায় পাটা দিয়ে মাছ চাষ দেড় হাজার বিঘা জমির ফসল নষ্ট
কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা: যশোরের কেশবপুরে মহাদেবপুর সরকারি খালে ঘের মালিকের দেয়া পাকাগেটটি অপসারণ করার কিছুদিন যেতে না যেতেই ওই ঘের মালিক পুনরায় খালে পাটা দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড় বগা স্লুইস গেটের মুখও ইট দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় বগা ও মহাদেবপুর বিলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যে কারণে ওই দুই বিলের দেড় হাজার বিঘা জমির উঠতি পাট ও শাক-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। এলাকাবাসি কপোতাক্ষ নদে বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্যে ওই খালের পাটা ও বন্ধ হওয়া স্লুইস গেট উন্মুক্তের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যপারে গত মঙ্গলবার শতাধিক লোকের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর, মোমিনপুর, আড়ংপাড়াসহ ৭/৮ গ্রামের বর্ষার অতিরিক্ত পানি মহাদেবপুর খাল ও বগার খাল দিয়ে কপোতাক্ষ নদে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ২০১৫ সালে কেশবপুর পৌর এলাকার বায়সা গ্রামের মিনার হোসেন ওই বিলে মাছের ঘের করেন। এ সময় তিনি এলাকার প্রভাবশালীদের অনৈতিক সুবিধা দিয়ে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ করে বিলের ৮‘শ বিঘা জমি ডিড করে নেন।
তিনি ঘেরের বেড়িবাঁধ নির্মাণের সময় সরকারি রাস্তা বেঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করাসহ একটি সরকারি খাল ভরাট ও অপর একটি সরকারি খালের মুখে পাকা গেট করে অবৈধভাবে এলাকার ১০০ বিঘা ৩ ফসলি উঁচু জমি ও ক্ষুদ্র মাছ চাষীদের ১৫টি টপ ঘের জবর দখল করে মাছ চাষ শুরু করেন। সেই থেকে পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে ওই ঘেরের বাইরের দেড় হাজার বিঘা জমিসহ চারপাশের শতাধিক পরিবার প্রতি বছর পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছে। এসব ঘটনায় গত বছর এলাকাবাসি বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের তৎকালিন চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ ৫টি শর্তে ওই ঘের মালিককে মাছ চাষের অনুমতি দেন। কিন্তু বর্তমান ওই ঘের মালিক এ নির্দেশ অমান্য করে ঘেরে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে মাছ চাষ করছেন। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই ঘেরের বাইরের কৃষকদের লাগানো শাক-সবজি, আউশ ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হচ্ছে। যে কারণে এলাকাবাসি গত ১১ জুন প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন। ১৪ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে ওই খালের পাকা গেটটি অপসারণ করেন এবং সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে বাউশলা ইউনিয়ন তহশীলদার বাদি হয়ে ঘের মালিকসহ ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।