ঢাকা, শুক্রবার 29 March 2024, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

টিকিটের জন্য কমলাপুরে উপচে পড়া ভিড়

অনলাইন ডেস্ক: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরুর দ্বিতীয় দিন টিকেট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড় হয়েছে ঢাকার কমলাপুরে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই টিকেট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন।

শনিবার সকাল ৮টা থেকে কমলাপুর স্টেশনের ২৩টি কাউন্টার থেকে একসঙ্গে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এদিন দেওয়া হয়েছে ২৮ অগাস্টের টিকেট।

এবার কোরবানির ঈদে তিন দিনের সরকারি ছুটি শুরু হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। আগের দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় সেদিনের টিকেটের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

শনিবার ৩১টি আন্তঃনগর ট্রেনের বিভিন্ন গন্তব্যের ২২ হাজার ৪৯৬টি টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। ৩৫ ভাগ কোটার জন্য রেখে বাকি টিকেট কাউন্টার থেকে পাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঈদের বিশেষ ট্রেনের ২ হাজার ৬০৬টি টিকেটও কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।

শনিবার সবগুলো কাউন্টারের সামনেই ছিল দীর্ঘ লাইন। টিকেটের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের সারি টার্মিনাল ভবন ছাড়িয়ে স্টেশনের প্রবেশপথ পর্যন্ত চলে গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া যাওয়ার টিকেটের জন্য শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় স্টেশনে এসেছেন বলে জানান বেসরকারি চাকুরে কামরুজ্জামান। শনিবার সকাল ৮টায় টিকেট পেলেন তিনি।

কামরুজ্জামান বলেন, “পরিবারের সবাইকে নিয়ে যাবে। আমাদের ওই দিকে সড়কপথ ভালো, তবে সবাই বাসে চলতে পারে না। এজন্য ট্রেনে যাই। টিকেট কনফার্ম করার জন্যই আগের রাতে এসে বসেছিলাম। টিকেট পাওয়ার পর এখন ভালো লাগছে।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে জয়ন্তিকা ট্রেনের টিকেট কিনেছেন ধোলাইখালের টায়ার ব্যবসায়ী মো. জুয়েল। তিনি জানান, পরিবারের সবাইকে আগে পাঠিয়ে দিতেই ট্রেনের টিকেট নিতে আসেন তিনি।

“আমার পরিবারের সবাই ট্রেনে যেতে চায়। বাসে গেলে বমি করে দেয়। ট্রেনে সেই সমস্যা নাই। আরামে যাওয়া যায়।”

উত্তরবঙ্গের ট্রেনের টিকেট কাউন্টারে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। এসব ট্রেনের টিকেটের জন্য শুক্রবার দুপুর থেকেই লোকজন কাউন্টারের সামনে ভিড় করেছেন।

রাজশাহীর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেটের জন্য শুক্রবার দুপুর ২টায় কমলাপুরে আসা মাদ্রাসা ছাত্র মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ কাঙ্ক্ষিত টিকেট পেয়ে বেশ খুশি।

“আমরা উল্লাপাড়া যাব। আগে এসেছিলাম বলে ১০ নম্বর সিরিয়ালে থাকতে পেরেছি। এ কারণে টিকেটও পাইছি। এখন বেশ শান্তি লাগছে।”

পদ্মা এক্সপ্রেসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের টিকেট পেয়েছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা মাসুদ রানা।

“গতকাল দুপুর থেকে ছোটভাইকে দাঁড় করিয়েছিলাম। আমি এসেছি সকাল ৭টায়। ১০ নম্বর সিরিয়াল ছিল বলে কেবিনের টিকেট পেয়েছি। বাচ্চাকাচ্চা যাবে, স্ত্রী যাবে, সবাইকে নিরাপদে পাঠাতে পারছি, এটা সন্তুষ্টির। সবাই যদি টিকেট পেত, তাহলে খুবই ভালো হত।”

তবে বিক্রি শুরুর আধাঘণ্টার মধ্যেই বিভিন্ন ট্রেনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরার টিকেট শেষ হয়ে গেছে জেনে ক্ষোভ জানিয়েছেন টিকেট প্রত্যাশীরা।

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. নাসিম অভিযোগ করেন, শুক্রবার দুপুরে এসে ১৪ নম্বর সিরিয়ালে থাকার পরও রাজশাহীর কোনো ট্রেনের এসি টিকেট পাননি।

“আমার আগে ৪ জন ১৬টা এসি টিকেট নিয়েছে। এখনই বলছে আর কোনো টিকেট নাই। শুধু পদ্মা ট্রেনেই তিনটা এসি বগি আছে। এতগুলো ট্রেন মিলিয়ে কি মাত্র ১৬টা টিকেট? তাহলে বাকি টিকেটগুলো গেল কই? ২০ ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর যদি বলে টিকেট নাই তাহলে কেমন লাগে বলেন।”

এসি টিকেট না থাকার বিষয়ে কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্ত্তী সাংবাদিকদের জানান, যাত্রীদের অভিযোগ সত্যি নয়।

“আমি নিজেই গিয়ে দেখে এসেছি সার্ভারে। এসি টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে, এগুলো কাউন্টার থেকেই বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু লোক অযৌক্তিক কথা বলছে।”

এসি টিকেটের স্টেশন প্রতি কোটা থাকে জানিয়ে যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত স্টেশনের না পেলে পরবর্তী স্টেশনের টিকেট কেনার পরামর্শ দেন সীতাংশু চক্রবর্ত্তী।-বিডিনিউজ

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ