বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রাজধানীর রসুলবাগ ও বকশিবাজারে দুটি পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

স্টাফ রিপোর্টার : প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর পুরাণ ঢাকার রসুলবাগে ও বকশিবাজার এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার দুটি আর্ন্তজাতিক মানের আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন পার্ক ও খেলার মাঠের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। স্থাপনা দুটি সংস্থাটির ২৬ নাম্বার ওয়ার্ডে অবস্থিত। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে মেয়র বলেন, এ ওয়ার্ডের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন প্রতিশ্রুত পুরাণ ঢাকায় প্রথমবারের মতো কোন আধুনিক মাঠ ও পার্কের উন্নয়ন কাজ শুরু করা হলো। এসময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, ২৩ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবীরসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, আমরা ডিএসসিসির এলাকায় অবৈধ দখলে রেখে অসামাজিক কাজে ব্যবহার করা ১৯ টি পার্ক ও ১২ টি খেলার মাঠকে দখলমুক্ত করেছি। নাগরিকদের স্বার্থে এসব পার্ক ও খেলার মাঠকে আর্ন্তজাতিক মানের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন করে রাজধানীর অন্যতম দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। এসব স্থাপনা তৈরির জন্য আমরা জলসবুজে ঢাকা নামে একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যার কাজ এর মাধ্যমে শুরু করা হলো। পর্যায়ক্রমে একে একে সকল পার্ক ও মাঠকে আমরা আধুনক ও আর্ন্তজাতিকমানের করে গড়ে তুলবো। এছাড়া এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট অভিজ্ঞ ৭০ জন স্থাপত্যবিদ বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন। উল্লেখ্য, ওয়ার্ডের বকশিবাজার এলাকায় অবস্থিত এ মাঠটি লালবাগ তথা পুরাণ ঢাকার সর্ববৃহত মাঠ হিসেবে পরিচিত।
মেয়র বলেন, পুরাণ ঢাকার নাগরিকদের কথা চিন্তা করে অতি প্রয়োজনীয় এ স্থাপনা দুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। যা সিটি কর্পোরেশনের ইতিহাসে এর আগে কোন পার্ক বা খেলার মাঠে এতো পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়নি। এর মধ্যে প্রায় ২৮ কাঠা আয়তনের পার্কটতে ব্যয় করা হবে দুই কোটি টাকার বেশী আর প্রায় ৭৫ কাঠা আয়তনের খেলার মাঠে ব্যয় করা হবে প্রায় ৫ কোটি টাকা। এ বছরের ২১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এর নির্মাণকাজ আগামী ২০ জুনের মধ্যে শেষ হবে।
সাঈদ খোকন বলেন, শহীদ আব্দুল আলীম খেলার মাঠ ও রসুলবাগ শিশুপার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের একটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের দ্বার উন্মুক্ত হলো। এসব উন্নয়ন কাজ সম্পাদিত হলে এলাকার চেহারা বদলে যাবে। নারী, শিশু এবং মুরুব্বীগণ এসব মাঠ ও পার্কে প্রাতঃভ্রমণসহ শিশুরা খেলাধুলার সুযোগ পাবেন। শহীদ আব্দুল আলীম খেলার মাঠে ফুটবল খেলার মাঠ, পেভিলিয়ন, ক্রিকেট খেলার নেট প্রাকটিস স্পেস, সকাল সন্ধ্যা পায়ে হাটার জন্য ২শ ৫০ মিঃ ওয়াকওয়ে, বসার জন্য পাবলিক প্লাজা, শিশুদের খেলার জন্য পৃথক জায়গা, লাইব্রেরি, ঈদের নামায পড়ার ব্যবস্থাসহ, জিমনেসিয়াম ও টয়লেট সুবিধা অন্তর্ভূক্ত থাকবে। এছাড়া রসুলবাগ শিশু পার্কে শিশুদের জন্য আধুনিক খেলার সরঞ্জামাদি, দোলনা, স্লিপার ইত্যাদি থাকবে। পেভিলিয়ন, সকাল সন্ধ্যা পায়ে হাটার জন্য ১শ ৫০ মিঃ ওয়াকওয়ে, বসার জন্য পাবলিক স্পেসসহ রিফ্রেসমেন্ট-এর ব্যবস্থা, মসজিদ সংলগ্ন স্থানে টয়লেট ও ওযুর ব্যবস্থা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় নাগরিকদের দাবির প্রেক্ষিতে শিশু পার্কের ভেতরের নকশায় সামান্য পরিবর্তনের দাবি জানালে সাথে সাথেই মেয়র দাবি অনুযায়ী সবকিছু পূরণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ আশ্বাস দেন। মেয়র বলেন, যে কোন দুর্যোগ ও সমস্যায় নাগরিকদেরও পাশে আছি। নাগরিকগণ আমাকে দুই বছর আগে ভোট দিয়েছেন। এবার আমার পালা তাদেরও বিপদে আপদে পাশে থাকা। চিকনগুনিয়া রোগ সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমরা বিভিন্ন প্রকার উদ্যোগের কারণে চিকনগুনিয়া রোগকে সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। বর্তমানে চিকনগুনিয়া রোগটির প্রায় ৯০ ভাগই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক বলেন, এই পার্ক ও মাঠটিকে আর্ন্তজাতিক মানের স্থাপনা হিসেবে নির্মাণের জন্য এলাকাবাসীর দাবি ছিল যা এখন পূর্ণ হওয়ার পথে। এছাড়াও ডিজটিাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে আমরা প্রতিটি গলিতে ফ্রি ওয়াইফাই জোন হিসেবে গড়ে তুলেছি। আজিমপুর কবরস্থানে রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ মসজিদ হিসেবে ৫ থেকে ৭ হাজার মুসুল্লি একসাথে নামায আদায় করতে পারবে এমন দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ এলাকার একটি মাত্র গলি ছাড়া সকল রাস্তাই নির্মাণ করা হয়েছে। মশক নিধন সহ সকল কাজই সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে। ফলে এই ওয়ার্ডটি ডিএসসিসির অন্য যে কোন ওয়ার্ডের চেয়ে আলাদা। এই কাজে সর্বোচ্চ সহযোগীতার জন্য তিনি নাগরিকদের অভিন্দন জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ