শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

কেসিসি’র খোন্দকার নাসের উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমস্যায় জর্জরিত

খুলনা অফিস : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত খোন্দকার নাসের উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বেহাল দশায় রয়েছে। বিদ্যালয় ভবন ও মাঠের অবস্থা চরমে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতা। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরাও দুর্ভোগের মধ্যে থাকছেন।
জানা গেছে, খোন্দকার নাসের উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। কিন্তু এখানে স্কুলে ভর্তি অনুযায়ী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮০ জন বলে জানা গেছে। কিন্তু এখানে নিয়মিত ৬৫-৭০ জন উপস্থিত থাকে বলে স্কুলের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন। এছাড়া স্কুলে নেই তেমন কোন ভবন। তারপরেও সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ডুবে একাকার হয়ে যায় স্কুলের শ্রেণিকক্ষ। এমনকি স্কুলের জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড পর্যন্ত ভাঙা। এজন্য পতাকা উড়ানো হয় অর্ধেক ভাঙা স্ট্যান্ডে।
আর মাঠের জলাবদ্ধতা কমানোর নেই তেমন কোন ব্যবস্থা। আগে ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে স্কুলের পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন নির্মাণে মাঠের পানি সরানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে। তবে ভিন্ন মাধ্যমে স্কুল প্রাঙ্গণের পানি সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, স্কুলটির একটি কক্ষে শিক্ষকরা বসে আছেন। আর প্রধান শিক্ষক তার কক্ষে বসে রয়েছেন। তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলটিতে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত এমপিও’র অন্তর্গত হয়নি। একই সাথে এখানের অধিকাংশ শিক্ষার্থী হতদরিদ্র পরিবারের। পরে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোন বেতন নেওয়া হয় না। শুধুমাত্র পরীক্ষার ফিস গ্রহণ করা হয়। এদিকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি তেমন পরিলক্ষিত হয়নি। ১০-১৫ জন শিক্ষার্থীকে স্কুলের বারান্দা দিয়ে এলামেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এছাড়া স্কুলের একটি কক্ষে সাইকেল রাখা এবং বেঞ্চ রাখা হয়েছে। অন্য একটি কক্ষ সম্পূর্ণ ফাঁকা রয়েছে। তবে বেঞ্চগুলো কক্ষের বাইরে রাখা হয়েছে। একই সাথে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ক্লাস চলাকালীন সময়ে কথা হয় শিক্ষার্থীদের সাথে। সেখানে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
ষষ্ঠ শ্রেণির তামিম হোসেন জানান, তার ক্লাসে ৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু সে তার ক্লাসে কখনো সকল শিক্ষার্থী দেখেনি বলে জানিয়েছে।
এদিকে একই শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমন আহমেদ জানায়, শিক্ষকরা তাদের নিয়মিত ক্লাস নিয়ে থাকেন।
নবম শ্রেলির বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম বলে, তার ক্লাসে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়া ক্লাসে পানি পড়ে ও মাঠ জলাবদ্ধ থাকে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম সরদার বলেন, গতবছর স্কুল থেকে ১১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু তার মধ্যে পাস করে মাত্র ৬ জন। এছাড়া স্কুলের শিক্ষকরা ভাতা পায়না বলে সার্ভিসও কম দেয় বলে জানিয়েছেন। তবে স্কুলটি কেসিসি’র আওতাভুক্ত হওয়ার পাশাপাশি এমপিওভুক্ত করার কার্যক্রম চলছে বলেও জানিয়েছেন এ শিক্ষক।
কেসিসি’র শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অফিসার এস কে এম তাছাদুজ্জামান বলেন, স্কুলের সভাপতি মেয়র মহোদয়। বিষয়টি তিনি দেখবেন। আর স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা অনেক কম। তারা নিয়মিত আসেও না। তবে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং স্কুলটি কিভাবে ভাল করা যায় সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে আরো শিক্ষক নিয়োগ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, খোন্দকার নাসের উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত। স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন খন্দকার ইমরান উদ্দীন। স্কুলটি মহানগরীর বয়রাস্থ ১৬নং ওয়ার্ডে অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানাভাবে চেষ্টা করেও এখনো স্কুলটি এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তারপরে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নেওয়ার পর স্কুলটি নতুন করে নামকরণ করা হয় কেসিসি খোন্দকার নাসের উদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। আর সেখান থেকে কেসিসি’র নিয়ন্ত্রণে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিদ্যালয়টি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ