টাঙ্গাইলে রাজন হত্যা মামলায় ১২ জনের ফাঁসির আদেশ
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভালকুটিয়া গ্রামের কলেজ পড়–য়া ছাত্র রবিউল ইসলাম রাজন হত্যা মামলার রায়ে গতকাল মঙ্গলবার টাঙ্গাইল স্পেশাল জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার ১২ জনের ফাঁসির আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল সকালে রাজনের বাড়ি ভালকুটিয়ায় একই গ্রামের আসামীরা তাদের বাড়ির যায়গা দখলকে কেন্দ্র করে রাজন ও তার বাবা মায়ের উপর হামলা চালায়, এ সময় রাজনের মাথায় উপর্যপুরি আঘাতে রাজন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আশে পাশের লোক জন রাজনকে আহত অবস্থায় প্রথমে ভূঞাপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার আরো অবনতি হলে ডাক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের জন্য ঢাকা নেয়ার পথেই রাজন মারা যায়। এ ঘটনায় রাজনের বাবা লাল মিয়া বাদী হয়ে ভূঞাপুর থানায় ১৯ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে ততকালীন ভূঞাপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ ৭ জনকে বাদ দিয়ে ১২ জনের নামে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রকাশ্য দিবালোকে এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ৮ জন স্বাক্ষী তাদের স্বাক্ষ্য প্রদান করে। গত ১২ জুলাই সকল বিষয়ের যুক্তিতর্ক শেষে ৮ আগষ্ট রায়ের দিন ধার্য্য করা হয় এবং আদালতে হাজির হওয়া ৮ আসামীর জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার পলাতক ৪ আসামী অনুপস্থিতিতেই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ১২ জনকে মৃত্যু দন্ড দেয় আদালত। মৃত্যু দন্ড প্রাপ্ত আসামীরা হল ১) সাইদুল ২) মজিদ ৩) মজিদ ৪) মজনু ৫) মোমিন ৬) নিজাম ৭) আবুবকর সিদ্দিক টুনু ৮) হানু ৯) নূরুল ইসলাম ১০) বাবু ১১) সিরাজ ১২) ওয়াহাব এদের সকলের বাড়ি ভূঞাপুর উপজেলার ভালকুটিয়া গ্রামে। এর মধ্যে পলাতক রয়েছে মজিদ ১ ও মজিদ ২, নুরুল ইসলাম ও মজনু। মামলা পরিচালনায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি মুলতান হোসেন ও বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট নাজিম উদ্দিন। মা শাহিদা বেগম ও বাবা লাল মিয়া সরকারের একমাত্র কলেজ পড়–য়া সন্তান রাজনকে হারিয়ে তারা পাগল প্রায়। দীর্ঘ তিন বছর চার মাস পর সন্তান হত্যাকারী ১২ ঘাতকদের বিচারের রায়ে খুশি হয়ে মা বলেন, আমার একমাত্র সন্তান যারা কেড়ে নিছে আইন আজকে তাদের ফাঁসি দিছে এতে আমি খুৃব খুশি হয়েছি আমার ছেলে ফিরে না পেলেও ঘাতকদের ফাঁসি কার্যকর দেখে মরতে চাই।