বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে নীতিমালার খসড়া করছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার : বিদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে দেশী বিনিয়োগকারীদেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে সরকার। দেশের বাইরে টেকসই বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগ সহায়ক একটি ‘বিদেশী বিনিয়োগ নীতিমালা’ তৈরি করা হচ্ছে। খুব শিগগির তার খসড়া প্রদান করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের বিদেশে বিনিয়োগ বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ণ কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য অজিত কুমার পাল। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনটির পরিচালক এম এস সিদ্দিক।
অজিত কুমার পাল বলেন, বাংলাদেশী কোম্পানিগুলোকে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। এজন্য বিদেশে বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের বিনিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রনয়ণে কাজ চলছে। যা খুব শিগগির প্রনয়ণ করা হবে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছে বিডা।
বিদেশী বিনিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালার বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করছেন অজিত কুমার পাল। তিনি বলেন, এ নীতিমালা প্রনয়ণের জন্য আমরা কাজ করছি। সে জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ও ডাটা সংগ্রহের কাজ চলছে। সকল দিক বিবেচনা করে একটি সার্বজনীন নীতিমালা প্রনয়ণ করা হবে।
এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার মজুত, আয়ের টাকা ফেরত আনা, কোন কোন খাতে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করা হবে- তা নির্ধারণ এবং দেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে ভারতসহ অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। এছাড়া স্টেকহোল্ডার ও বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হবে।
অজিত কুমার পাল বলেন, বর্তমানে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যম মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আমাদের গার্মেন্টবহির্ভূত অন্যান্য শিল্পেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম  বলেন, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে দেশী বিনিয়োগকারীদের দক্ষতা অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে তাদের মূলধনও বেড়েছে। এখন বিদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী দেশের ব্যবসায়ীরা। ফলে বিদেশে মূলধন না বাড়িয়ে; বিনিয়োগ বাড়ানোর সুযোগ দিতে হবে তাদের।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশীয় বিনিয়োগকারীরা অনেক দক্ষ। এই দক্ষতা দিয়ে দেশের বাইরেও সফলভাবে বিনিয়োগ করতে পারবেন তারা। তাদের এই দক্ষতাকে কাজে লাগানো সুযোগ তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ না পেয়ে দেশে ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। মূলত এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ খাতগুলোতে তাদের বিনিয়োগের কোনো কথা ছিল না। এসব ঝুঁকিপূর্ণ খাতে বিনিয়োগ করে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে তারা। বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিলে এই ঝুঁকি হ্রাস পাবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের- এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ কর্যক্রম হাতে নিতে হবে। এর মাধ্যমে তারা দেশে এবং দেশের বাইরে বিনিয়োগ করতে পারবে। তিনি বলেন, শুধু রপ্তানিকারকদের নয়; বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসহ সকল সাইটকেই এগিয়ে নিতে হবে। এ জন্য সরকারি পর্যায় থেকে দেশে এবং বিদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ