শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

৭৫ কোটি টাকার ১৫ লাখ ইয়াবা ও ট্রলারসহ ১২ জন গ্রেফতার

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বহিঃনোঙ্গর সমুদ্রে  র‌্যাব-৭ সাড়াশীঁ অভিযান চালিয়ে  ৭৫ কোটি টাকার ১৫ লক্ষ ইয়াবাসহ ১ টি ট্রলার আটক এবং ৫ জন মায়ানমারের নাগরিকসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে।
র‌্যাব ৭ সুএ জানায়, র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, মায়ানমার এবং এ দেশীয় চোরাচালানীদের বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক পাচারকারী চক্র মাছের ব্যবসার আড়ালে ইয়াবার চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে নিয়ে আসে।  সাম্প্রতিক সময়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ইয়াবার বিস্তার রোধে সমুদ্রে টহল ও নজরদারি জোরদার করে এবং টেকনাফ থেকে চট্টগ্রাম রুটে মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ইয়াবার বেশ কয়েকটি বড় চালান আটক করে। এজন্য বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তাদের কৌশল/রুট পরিবর্তন করে মায়ানমার থেকে ইয়াবার চালানগুলো নিয়ে এসে চট্টগ্রামের গহিরা, আনোয়ারা, পতেঙ্গা সী-বিচ, খেজুরতলা সী-বিচ, হালিশহর সী-বিচ, ভাটিয়ারি এবং কুমিরা ইত্যাদি অঞ্চলের জনবিরল অংশে সন্ধ্যায় বা রাতে খালাস করা শুরু করে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এসব অঞ্চলেও ব্যাপক গোয়েন্দা কার্যক্রম ও নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায়, র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, একটি মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেট মায়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান ট্রলারে করে সমুদ্রপথে এনে চট্টগ্রামে খালাস করবে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৩ জুন বিকাল সাড়ে ৫টায় লেঃ কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদ, অধিনায়ক, র‌্যাব-৭ এর নেতৃত্বে একটি  আভিযানিক দল চট্টগ্রাম সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় অবস্থান নেয় এবং ব্যাপক গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে ‘মায়ের দোয়া’ নামক একটি দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রলারকে সনাক্ত করতঃ ধাওয়া করে আটক করতে সক্ষম হয়। উল্লেখ্য যে, দ্রুত গতির জন্য ট্রলারটিতে সাধারণ ইঞ্জিনের পরিবর্তে ‘‘হিনো বাস’’ এর শক্তিশালী ইঞ্জিন মডিফাই করে লাগানো ছিল। পরবর্তীতে আটককৃত মায়ের দোয়া নামক ট্রলারটি তল¬াশী করে ১৫ লক্ষ পিস ইয়াবা এবং ০৫ জন মায়ানমারের নাগরিকসহ সর্বমোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত হচেছ-১)নজির আহমেদ (৫৫) @ দুল¬া মাঝি (মাঝি), পিতাঃ মৃত মোহাম্মদ হোসেন, গ্রামঃ পুটিবিলা, থানাঃ মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার। ২। মোঃ হাসেম (১৯), ইঞ্জিনম্যান, পিতাঃ মামুনুর রহমান, গ্রামঃ পুরিবিলা, থানাঃ মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার।৩।    মোঃ ছাদেক (২৫), পিতাঃ মৃত লালু মিয়া, গ্রামঃ বৈদ্য ভিটা, পোঃ অংলাপাড়া, থানাঃ লামা, জেলাঃ বান্দরবান। ৪।    খায়রুল আমিন (২০), পিতাঃ মোঃ সিদ্দিক, গ্রামঃ গুনাপাড়া, পোঃ গোরক ঘাটা, থানাঃ মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার।৫।    মোঃ জাফর (৩০), পিতাঃ মৃত লালু মিয়া, গ্রামঃ পুটিবিলা, পোঃ গোরকঘাটা, থানাঃ মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার। ৬।    মোঃ খোকন (২৫), পিতাঃ রেজাউল করিম, গ্রামঃ পুটিবিলা, পোঃ গোরকঘাটা, থানাঃ মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার। ৭।     মোঃ ইসমাইল (২০)-মায়ানমার, পিতাঃ নুরুল ইসলাম, গ্রামঃ চকবাজার, পোঃ টেকনাফ, থানাঃ টেকনাফ, জেলাঃ কক্সবাজার। ৮।     মোঃ আনিসুর রহমান (১৮), পিতাঃ ফজল আহাম্মদ, গ্রামঃ পুটিবিলা, পোঃ গোরকঘাটা, থানাঃ মহেশখালী, জেলাঃ কক্সবাজার। ৯।     মোঃ আব্দুল খালেক (২০)-মায়ানমার, পিতাঃ নুর আলম, গ্রামঃ লেদা শরনার্থী ক্যাম্প, সি ব-ক, রুম নং-২৭২, থানাঃ টেকনাফ, জেলাঃ কক্সবাজার। ১০।     মোঃ সাদ্দাম হোসেন (১৯)-মায়ানমার, পিতাঃ নুরুল আলম, গ্রামঃ লেদা শরনার্থী ক্যাম্প, সি ব¬ক, রুম নং-২১০, থানাঃ টেকনাফ, জেলাঃ কক্সবাজার। ১১।     মোঃ নুর আলম (২৫)-মায়ানমার, পিতাঃ মৃত ইউনুছ, গ্রামঃ লেদা শরনার্থী ক্যাম্প, ডি ব্লক, রুম নং-১৬৩, থানাঃ টেকনাফ, জেলাঃ কক্সবাজার। ১২।  মোঃ সেলিম মলয় (২০)-মায়ানমার, পিতাঃ মোঃ সাইদুর রহমান, গ্রামঃ লেদা শরনার্থী ক্যাম্প, সি ব্লক, রুম নং-৫৯, থানাঃ টেকনাফ, জেলাঃ কক্সবাজার।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, উক্ত ইয়াবার মালিক মোঃ ফারুক (৪২), পিতাঃ মৃত সাইদুল হক, গ্রামঃ নন্দেরখীল, পোঃ নন্দেরখীল, ইউনিয়নঃ ধলঘাট, থানাঃ পটিয়া, জেলাঃ চট্টগ্রাম, যিনি মাদক জগতে বাইট্টা ফারুক ওরফে বিচ্চু ফারুক নামে পরিচিত। জব্দকৃত ‘মায়ের দোয়া’ ট্রলারটি  ছাদেক (২২), পিতাঃ মৃত লাল মিয়া, গ্রামঃ বদ্ধবিটা, পোঃ অংলাপাড়া, থানাঃ লামা, জেলাঃ বান্দরবান এর নামে রেজিষ্ট্রি থাকলেও মূলত এর প্রকৃত মালিক ফারুক এবং ট্রলারটির মাঝি  নজির আহমেদ। ইতোপূর্বে তারা এই ট্রলারে করে মোট ০৫ বার ইয়াবার চালান আনতে মায়ানমার যায়। এর মধ্যে তিনবারে ১০ লক্ষ করে সর্বমোট ৩০ লক্ষ পিস ইয়াবার চালান নিয়ে আসে এবং বাকি দুবার প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ইয়াবা না নিয়ে ফেরত আসে। সর্বশেষে ৬ষ্ঠবার মায়ানমার থেকে ১৫ লক্ষ পিস ইয়াবা পাচারকালে গত ২৩ জুন   র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম কর্তৃক ধৃত হয়। ইয়াবার মালিক মোঃ ফারুককে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় তার নামে মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের আনুমানিক মূল্য ৭৫ কোটি টাকা এবং জব্দকৃত ফিশিং ট্রলারটির মূল্য আনুমানিক ১ কোটি টাকা। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেট সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ