পোশাক শিল্পের অবস্থা খুবই নাজুক -বিজিএমইএ
স্টাফ রিপোর্টার : তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেছেন, ২০ রোজার মধ্যে পোশাক শ্রমিকরা ঈদ বোনাস বা উৎসব ভাতা পরিশোধ করা হবে। শ্রমিকরা যেন এ নিয়ে কোন আন্দোলন করতে না পারে সে ব্যাপারে বিজিএমইএ সজাগ রয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) কার্যালয়ে তৈরি পোশাক শিল্পের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট-বিষয়ক কোর কমিটির ৩৩তম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু। আরো উপস্থিত ছিলেন, শ্রম সচিব মিকাইল শিপার, ডিআইএফইর মহাপরিদর্শক সামছুজ্জামান ভূঁইয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি, গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি লীমা ফেরদৌস প্রমুখ।
নাছির বলেন, ২০ রোজার মধ্যেই শ্রমিকরা বেতন-ভাতা পেয়ে যাবেন। সেটি নিশ্চিত করতে প্রতি বছরের মতো এবারও বিজিএমইএতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হবে এবং তদারকি করা হবে।
তিনি বলেন, পোশাক শিল্পের অবস্থা খুবই নাজুক। গত ১০ বছরে আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ থাকলেও গত ১০ মাসে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ২১ শতাংশ। আমরা কিন্তু কঠিন সময় পার করছি। তারপরও শ্রমিকরা যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা নেব।
ঈদ বোনাস পরিশোধের সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না করে মোহাম্মদ নাছির তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা চেষ্টা করব প্রতিটি কারখানা যেন উৎসব ভাতা পরিশোধ করে। আর জুন মাসের বেতনের বিষয়ে তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিকের সম্পর্কের ভিত্তিতে ১০-১৫ দিনের মজুরি আমাদের মালিকেরা পরিশোধ করবেন। সেই প্রতিশ্রুতি আমরা দিতে পারি।
পরে বৈঠক শেষে জানতে চাইলে বিজিএমইএর এই সহসভাপতি বলেন, ২০ রোজার মধ্যেই শ্রমিকেরা বেতন-ভাতা পেয়ে যাবেন। সেটি নিশ্চিত করতে প্রতিবছরের মতো এবারও বিজিএমইএতে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হবে। তদারকি করা হবে। এ নিয়ে দুর্চিন্তার কোন কারণ নেই। শ্রমিকরা যেন এ নিয়ে কোন আন্দোলন করতে না পারে সে ব্যাপারে বিজিএমইএ সজাগ রয়েছে।
কয়েক বছর ধরে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টু বিষয়ক কোর কমিটির সভায় ঈদ বোনাস পরিশোধের একটি সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও এবার হয়নি। আজকের সভার প্রধান ইস্যু ঈদের আগে সুষ্ঠুভাবে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নিয়ে আলোচনা হয়েছে কম। সভার অধিকাংশ সময়জুড়ে নিবন্ধনবিহীন ফেডারেশন ও তাদের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে শ্রমিক নেতা লীমা ফেরদৌস বলেন, অনেক পোশাক কারখানার মালিক এমন সময় বেতন-ভাতা দেন যে পোশাক শ্রমিকেরা না পারেন ঈদের জামা কিনতে, না পারেন বাসের টিকিট কাটতে। তাই তিনি পোশাক শ্রমিকদের ১৫ রোজার মধ্যে ঈদ বোনাস ও বকেয়া ওভারটাইম এবং ঈদের ছুটির আগেই জুন মাসের ২০ দিনের বেতন পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছেন।
সিরাজুল ইসলাম ও লীমা ফেরদৌস অভিযোগ করে বলেন, নিবন্ধনবিহীন ফেডারেশন নিয়মতান্ত্রিক শ্রমিক আন্দোলন করছে না। সে জন্য শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
পরে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, যেসব শ্রমিক ফেডারেশন নিবন্ধিত নয়, তাদের তালিকা করা হবে। তারপর তাদের চিঠি দিয়ে বলা হবে, শ্রম আইন অনুযায়ী অনিবন্ধিত সংগঠন শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করাটা নিয়মের বাইরে। এ ছাড়া যেসব এনজিও শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে, তাদের অনুমতি ও সক্ষমতা আছে কি না, সেটিও খোঁজখবর নেয়া হবে বলে জানান তিনি।