বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও আপাতত তাপদাহ থেকে মুক্তির সুখবর নেই

স্টাফ রিপোর্টার : জ্যৈষ্ঠের বিদায় বেলায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে প্রতীক্ষার বৃষ্টি এলো রাজধানীর বুকে। তবে তা যন্ত্রে পরিমাপযোগ্য, সামান্য বৃষ্টিপাত যাকে বলে। অবশ্য চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের মাটিতে আকাশ থেকে এক ফোঁটাও বারিপাত হয়নি। অন্যান্য বিভাগের বেশ কয়েকটি স্থানে এদিনকার বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও আবহাওয়ার পূর্বাভাস আপাতত তাপদাহ থেকে মুক্তির কোন সুখবর দিতে পারছে না। এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৯টা) রাজধানীর অনেক এলাকায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
আগের দিন বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ঢাকায় ৩৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে গতকাল তা কমে সকালে ছিল ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অতিষ্ঠ নগরবাসী গরম থেকে বাঁচার চেষ্টায় মশগুল ছিল। এরই মধ্যে বিকেলে রাজধানীতে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। যদিও তা স্থায়ী ছিল কয়েক মিনিট। তবে এতেই প্রকৃতিতে কিছুটা হিমেল হাওয়া ছড়িয়ে যায়।
অন্যদিনের মতো নগরীর আকাশে সূর্যের তেজীভাব ছিলো না। পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে সকাল থেকেই আকাশ ছিলো মেঘলা। ঘনকালো মেঘ সকাল থেকে ঢেকে দিচ্ছিলো সূর্যের তাপ। নগরীতে বৃষ্টি হতে পারে সকাল থেকেই অনেকটা টের পাওয়া যায়। তাপদাহ থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দিয়ে অবশেষে চারটার পর রাজধানীতে পড়তে থাকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি।
এমন বৃষ্টি সত্যিই স্বস্তি দিয়েছে নগরবাসীকে। খরতাপে দগ্ধ নগর জীবনে পরিত্রাণ মিলেছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে। ঘড়ির কাটা ঠিক চারটার পর থেকে নগরীর বেশ কিছু স্থানে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বিশেষ করে রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী, বনানী, গুলশান ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টিপাত প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে সন্ধ্যার পর থেকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাাবনা রয়েছে। এরকম বৃষ্টিপাত কয়েকদিন চলবে। তীব্র তাপদাহ থাকবে না। এটা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী চব্বিশ ঘন্টায় রংপুরের রাজারহাটে সর্বোচ্চ ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। একই সঙ্গে টাঙ্গাইল ১২ মিলিমিটার, ময়মনসিংহ ২৬, নেত্রকোনা ৪, সিলেট ২৭, শ্রীমঙ্গল ৪, বগুড়া ৪১, বদলগাছী ৩৪, তাড়াশ ৩১, রংপুর ৩৪, দিনাজপুর ২২, সৈয়দপুর ১৩, তেতুলিয়া ৪১, ডিমলা ৪২ ও যশোরে ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে তাপদাহে এখনও পুড়ছে রাজশাহী, পাবনা, রাঙামাটি, চাঁদপুর নোয়াখালী ও কক্সবাজার অঞ্চল। গতকাল সন্ধ্যা ৬টার তথ্য অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সাতক্ষীরায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, মাইজদীকোর্ট, ফেণী, ঈশ্বরদী, খুলনা, মংলা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, বুিরশাল ও পটুয়াখালীতে ৩৬ ডিগ্রির ওপর তাপমাত্রা ছিল।
এদিকে গতকাল সকাল ৯টা ও সন্ধ্যা ৬টার বুলেটিনে অভিন্ন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। অপর একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দম্কা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানতঃ শুষ্ক থাকতে পারে। রাজশাহী, পাবনা, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর নোয়াখালী ও কক্সবাজার অঞ্চলসহ ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গত কয়েক দিনে বাতাসে বেশি জলীয় বাষ্প থাকায় বেশি অস্বস্তি দেশজুড়ে। গরমে পেটের পীড়া, জ্বর, হিটস্ট্রোকের প্রকোপ বেড়েছে। বৃদ্ধ ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এপ্রিল-মে মাসে স্বাভাবিক নিয়মেই তাপমাত্রা বেশি থাকে। তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু তাপদাহ, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি তাপদাহ, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা থাকলে তীব্র তাপদাহ ধরা হয়ে থাকে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ