শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

৫ বছর পর খুলছে আরব আমিরাতের শ্রম বাজার

স্টাফ রিপোর্টার: ৫ বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্ধ ভিসা চালু করতে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদ ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী সাকর ঘোবাস সাঈদ ঘোবাস। আমিরাত সফররত বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈ দেশীক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। ২০১২  সালের আগস্ট মাসে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়া বন্ধ করার ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা ১১ টায় আবুধাবিতে আমিরাতের মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ওই তথ্য জানান। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এর সুফল পাওয়া যাবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশীক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈ দেশীক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম শামসুন্নাহার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
 বৈঠকে উভয় দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক, একই ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং পারস্পরিক অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা বজায় রাখার জন্য পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এর আগে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত সহযোগিতা চুক্তি ও আমিরাতে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরাটাইজেশন বিষয়ক মন্ত্রী সেদেশের উন্নয়নে বাংলাদেশী কর্মীদের অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া বাংলাদেশী কর্মীদের দক্ষতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, বর্তমানে আরব আমিরাতে অনেক বাংলাদেশী অবৈধভাবে বসবাস করছেন। তাদের দেশে ফেরত নেয়ার জন্য ঢাকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আমিরাত সরকার। আমিরাতের ওই আহ্বানের পর দূতাবাসের কর্মকর্তাদের স্থানীয় মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অভিবাসন ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে একযোগে কাজ করছে। উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামসমূহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সুষ্ঠু ও নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিভিন্ন ইস্যুতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। এতে কর্মীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা হচ্ছে।
আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশী কর্মীদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে আরো কর্মী পাঠাতে বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়ে তারা অত্যন্ত ইতিবাচক। বিষয়টি তাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে এবং তাদের অভ্যন্তরীণ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার আরো উন্মুক্ত করতে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, উভয় দেশের মধ্যে যৌথ টেকনিক্যাল কমিটির নির্ধারিত সভা ঢাকায় অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তার মন্ত্রণালয় কাজ করবে। বাংলাদেশের আমন্ত্রণে আমিরাতের এই মন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে তার আগ্রহের কথা জানান।
এর আগে ২০১২ সালের আগস্টে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়া বন্ধ করার ঘোষণা দেয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর প্রায় সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও নতুন করে শ্রমিক নেয়ার কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
দীর্ঘদিন দেশটির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক কোনো সফরও হয়নি। দুই বছর আগে বর্তমান প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করে এই প্রথম আমিরাত সফরে গেছেন তিনি। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই সফরে আমিরাতের শ্রমবাজারে বাংলাদেশীদের জন্য দরজা খোলার ইঙ্গিত আসছে।
২০১২ সালে সাময়িক ঘোষণায় আমিরাতের শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশীরা নতুন ভিসা ইস্যু ও অভ্যন্তরীণ ট্রান্সফার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। পাসপোর্ট খোয়া যাওয়া, রোহিঙ্গা ইস্যু আর সেখানে কিছু বাংলাদেশীর বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ ওঠায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে সেসময় মধ্যপ্রাচ্যের সম্পদশালী এই দেশ জানায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ