শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রংপুর স্বদেশ হসপিটালে ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যু ॥ তুলকালাম কাণ্ড

রংপুর অফিস : রংপুর মহানগরীর স্বদেশ হসপিটালে রোববার রাতে ভুল অপারেশনে একজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে পুলিশের উপস্থিতিতে রোগীর স্বজনদের ম্যানেজ করে পোস্ট মোর্টেম ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করেন।

হাসাপাতাল, রোগীর স্বজন ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১০ মে রংপুর মহানগরীর বুড়িরহাট এলাকায় মোটর সাইকেল সড়ক দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর আহত হন গঙ্গাচড়া উপজেলার মাস্টারপাড়া এলাকার সামসুজ্জামান শামীর পুত্র পাভেল (২২)। সাথে সাথেই তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দালালের মাধ্যমে তাকে স্বজনরা ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে রংপুর স্বদেশ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শনিবার তার অপারেশন করেন ডা. ইউনুস নামের এক চিকিৎসক। ভুল অপারেশনের কারণে তার অবস্থার অবনিত হতে থাকলে  রোববার রাত ১০ টার দিকে পাভেল মারা যায়। খবর পেয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। সেখানে ভুল অপরেশনে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে স্বজনরা হট্রগোল বাঁধিয়ে দেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন রংপুর ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই দিবাকর ও হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কিবরিয়া। এক পর্যায়ে সেখানে উত্তেজনা দেখা দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভুল স্বীকার করেন। তবুও অভিভাবকরা মানতে না চাইলে এক পর্যায়ে উপস্থিত পুলিশ ও আত্মীয়স্বজনদের আর্থিকভাবে ম্যানেজ করে পোস্ট মোর্টেম ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করেন। বিষয়টি নিয়ে সেখানে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে মৃতের মামা জানান, এক দালাল রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানায় স্বদেশ হসপিটাল ভালো। সেখানে অপারেশন করলে দ্রুত ভালো হয়ে যাবে। তারা ২৫ হাজার টাকা চায়। আমরা ২০ হাজার টাকা ঠিক করি। স্বদেশ হসপিটালে এসে ১০ হাজার টাকা নগদ জমা দেই এবং ৫ হাজার টাকার ওষুধ কিনে আনি। বাকি টাকা জোগার করতে ছিলাম রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু তারা আমার ভাগিনার পায়ে অপারেশন না করে কোথায় যেন কি করেছে সে মারা গেলো।

এ ব্যপারে ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দিবাকর জানান, স্বদেশ হসপিটালে ভুল অপারেশনে  কেউ মারা যাওয়ার ঘটনা নিয়ে বিশৃংখলা তৈরি হয়েছে এমন ধরনের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের সাথে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়ে লাশ হস্তান্তর করায় আমাদের আর কিছুই করার ছিল না। 

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জাতীয় পার্টি নেতা কাজী মশিউর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালে সামান্য হট্রগোল হয়েছিল। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। অভিভাবকরা লাশ নিয়ে গেছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ