ঢাকা, শনিবার 20 April 2024, ০৭ বৈশাখ ১৪৩০, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

মেহেরপুরে ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা

অনলাইন ডেস্ক: মেহেরপুর জেলার ৯ হাজার আমচাষি ও বাগান মালিক এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফেব্রুয়ারি মাসে আমের মুকুল থেকে কুড়ি বের হবার পর থেকেই তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। এখন বাগান মালিকরা বাগানের আম গাছে ওষুধ ¯েপ্রসহ বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যা করছেন। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ৩০ হাজার মেট্রিক টন আমও উৎপাদন হবে বলে আশা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি বিভাগ জানায়, দেশে আমচাষে প্রথমে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী। কিন্তু স্বাদে গন্ধে মেহেরপুর জেলার আম অতুলনীয়। এখন মেহেরপুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সব জাতের আমেরই চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর কৃষিজমিতে তৈরী করা হচ্ছে আমের বাগান।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১৫টির উর্ধে আমগাছ থাকা বাগানগুলোকে বাগানের আওতায় ধরে মেহেরপুর জেলায় ২ হাজার ৬৪ হেক্টর জমিতে আমের বাগান আছে। নতুন নতুন বাগানগুলো তৈরি হচ্ছে বনেদি ও হাইব্রিড জাতের। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, আশ্বিনা জাতের বেশি। সেই সঙ্গে গবেষণাকৃত বারি-৩, বারি-৪ জাতের বাগান তৈরির ক্ষেত্রেও আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে।

আম উৎপাদনে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরই মুজিবনগর খ্যাত মেহেরপুর জেলার স্থান।১৯৭১ সালের ১৭এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরের বিশাল আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের মন্ত্রী পরিষদের শপথ গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। তখন থেকে মুজিবনগরকে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী বলা হয়। ঐতিহাসিক এই পবিত্র ভূমি মেহেরপুর আম উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে থাকলেও আজও এখানে আধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে আম সংরক্ষণ করা হয় না। ফলে প্রতি বছর আম চাষিদের লাখ লাখ টাকার আম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় সরকারী ও ব্যক্তিগত মালিকানায় ছোট বড় মিলে সাড়ে ৫ হাজার আম বাগান রয়েছে। কৃষকদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং আম উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রতিবছর প্রশিক্ষণ, আম গাছের পরিচর্যা, সার প্রয়োগ, বয়স্ক আম গাছের পরিবর্তে নতুন নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতের চারা রোপন করা এবং রোগ ও পোকা মাকড় দমন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রয়োজন। 

অন্যদিকে আমের ফলন বেশি হলে যোগাযোগ ও পরিবহনের আসুবিধার জন্য কৃষকরা ভালো দাম পান না। বাগান মালিকগণ দালালদের খপ্পরে পড়ে অল্প দামে আম বিক্রি করে থাকেন। অনেক বাগান মালিক পাকা আম সংরক্ষণ করার নিয়ম জানেন না এবং সংরক্ষণ করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর বাড়িতে জাগ দেয়া আম পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। 

আম চাষিরা জানান, আম বাগানের ওপর বা বাগান করার জন্য কৃষি ব্যাংক কৃষকদের মাঝে ঋণ বিতরণ করলে আম বাগানের আরো সম্প্রসারণ ঘটবে। ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ সেন্টার স্থাপন করা হলে মেহেরপুরের ফল নষ্ট হবে না। এই এলাকায় আম বাগানের উন্নয়ন, ফলন বৃদ্ধি, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং নতুন জাত সম্প্রসারণে নতুন কলা-কৌশল ব্যবহার করার জন্য মেহেরপুরে একটি আম গবেষণাগার স্থাপন করা হলে পার্শ্ববর্তী জেলাতেও আম বাগান সম্প্রসারিত হবে।-বাসস

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ